রাবি: বন বিভাগকে না জানিয়ে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) কর্তৃপক্ষ প্রায় ৫০টি গাছ কাটা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১৫টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, অর্ধশত বছরের পুরনো এসব গাছ রুয়েট কর্তৃপক্ষ নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত অন্তত ১৫টি কৃষ্ণচূড়া ও মিনজিরি গাছ কাটা হয়েছে। যেসব গাছ কাটা হয়েছে এবং কাটার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে আছে- আম, লিচু, মেহগনি, কড়ই, মিনজিরি এবং কৃষ্ণচূড়া। গাছ কাটার পর কাঠের গুঁড়ি ক্যাম্পাসের বাইরে নেওয়া হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর জানায়, রুয়েটের পরিকল্পনা ও উন্নয়নের অফিস এবং সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার গাছ কাটার বিষয়টি তদারকি করছে। ১৯৬৪ সালে রুয়েট প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই গাছগুলো লাগানো হয়েছিল। প্রতিটি গাছের বাজার মূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা হলেও রুয়েট কর্তৃপক্ষ ১৫টি গাছ মাত্র ১ দশমিক ২৭ লাখ টাকায় বিক্রি করেছে। রুয়েটের কর্মচারী গোলাম মোস্তফা এসব গাছ কিনেছেন।
রুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সেলিম হোসেন বলেন, সম্প্রতি সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৬শ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। যার আওতায় আছে ১০টি ১০তলা ভবন নির্মাণ। এজন্য মোট ৫০টি গাছ কাটা হবে। এ বিষয়টি নিয়ে বন বিভাগকে না জানিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত এক বছর ধরে ক্যাম্পাসে প্রায় এক হাজার গাছ রোপণ করা হয়েছে। এতে গাছ কাটার ক্ষতিপূরণ হবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহমেদ নিয়ামুর রহমান বলেন, সরকারি গাছ কাটার জন্য কর্তৃপক্ষের বাধ্যতামূলকভাবে অনুমোদন নেওয়া উচিত। বন বিভাগের উচিত গাছের দাম মূল্যায়ন করা।
গাছের ক্রেতা গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি গাছ কাটার জন্য শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছি। কিন্তু রুয়েট কর্তৃপক্ষ বন বিভাগকে গাছ কাটার বিষয়ে অবহিত করেছিল কিনা জানি না।
জানতে চাইলে স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুস সামাদ বলেন, আমি রুয়েটের গাছগুলো দেখেছি। এর প্রতিটির বাজার মূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
এদিকে রুয়েট বৃক্ষনিধনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রুয়েটের প্রধান ফটকের সামনে পরিবেশ আন্দোলনের ব্যনারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, আমরা উন্নয়নের পক্ষে। তবে যেখানে অপরিত্যক্ত ভবন আছে, শ্রেণিকক্ষ আছে সেগুলো সচল না করে গাছ কেটে শত শত পাখির আবাস নষ্ট করা মানায় না। আমরা চায় রাজশাহী গ্রিন সিটি হিসেবে বিশ্বের কাছে আরও উন্নত হোক।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১
এএটি