কুমিল্লা: মধ্যরাতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলে ধারালো অস্ত্র হাতে বহিরাগত এক যুবক ঢোকেন। এরপর এ অবস্থায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঘোরাঘুরি করতেও দেখা যায়।
এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি, নিরাপত্তা কর্মী এবং শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়।
সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ওই যুবককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এবং তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, ওই যুবক মানসিকভাবে অসুস্থ। পরে তাকে পুলিশের মধ্যস্থতায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
প্রক্টরিয়াল বডির জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক জানান, তার নাম নুরন্নবী নিলয়, বাবার নাম জাহাঙ্গীর। তার বাড়ি কুমিল্লা সদর উপজেলার বাংলাবাজার সংলগ্ন ২৩ নং গেট এলাকায়। ওই যুবকের কাছে একটি বড় চাপাতি সদৃশ দেশীয় অস্ত্র, হিন্দিতে লেখা একটি চিরকুট, একটি এটিএম কার্ড ও একটি কম্পিউটার চিপ পাওয়া যায়।
প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা যায়, নিলয়কে অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাস এবং হলে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। পরে হল থেকে বের হয়ে তিনি মূল ফটক সংলগ্ন মামা হোটেলের সামনে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে ধরে ফেলেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ফয়জুল ইসলাম ফিরোজ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তবে এ ঘটনায় একাধিক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রায়ই নিরাপত্তাকর্মীদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে বহিরাগতরা অবাধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনায় প্রবেশ করেন। বিশেষ করে হলের গেটগুলোতে নিরাপত্তাকর্মীরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার নজরদারির অভাবে নিরাপত্তাকর্মীরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করে না। এতে যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা উচিত।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী প্রক্টর ফয়জুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, আমরা খবর পেয়ে ক্যাম্পাস গেট থেকে তাকে আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাই। পরে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন বলেন, আমাদের মেইন গেট এবং হলগুলোতে নিরাপত্তাকর্মীরা দায়িত্বে থাকার পরও অস্ত্রসহ এভাবে বহিরাগতদের প্রবেশ উদ্বেগজনক। যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় এবং যারা দায়িত্বে অবহেলা করছেন তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।
এ বিষয়ে কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) জেসমিন চাকমা বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। মনে হয়েছে, ছেলেটি মানসিকভাবে অসুস্থ। আমরা তার অভিবাবককে ডেকে তাদের জিম্মায় তাকে দিয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১
এসআই