ইবি: হল খোলার দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিছানাপত্র নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা ৷ বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে তারা সেখানে অবস্থান নেন।
পরে বিকাল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনের আহবানে তারা কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন৷ তবে প্রক্টরের-শিক্ষার্থী সাক্ষাৎকালে আগামী ৮অক্টোবরের ভেতর হল না খুললে আবারো আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়ে আসেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা শুরু হয়। প্রথমদিকে অনার্স ৪র্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের পরীক্ষা নেয়ার কথা থাকলেও বিভাগগুলো একই সাথে একাধিক বর্ষের পরীক্ষা নিচ্ছে। এমনকি কিছু বিভাগ ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার রুটিনও দিয়েছে।
যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী মেস গুলোতে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্যে করা গেছে। কোনো কোনো মেসে পূর্বের বর্ডার থাকা সত্ত্বেও মালিক সেখানে নতুন শিক্ষার্থীদের তুলেছে। আর অন্যদিকে পূর্বের বর্ডাদের পরীক্ষার তারিখ দিলে তারা মেসে এসে দেখেন তাদের সিট নেই। মেস মালিক তাদের না জানিয়েই অন্য আরেকজনকে ভাড়া দিয়ে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি করোনার এই সময় তারা পূর্বের ভাড়াও ঠিকঠাক দিয়েছে।
মেসের সিট না পেয়ে শিক্ষার্থীরা অনেকেই এখানে ওখানে রাত কাটাচ্ছে। আর এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কাছে হল খোলার দাবি জানিয়ে আসছিলো শিক্ষার্থীরা। তবে প্রশাসনের কাছ থেকে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে তোশক, বালিশ, বিছানার চাদর বিছিয়ে অনশন কর্মসূচি পালন করে।
অবস্থান কর্মসূচিতে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রায়হান বাদশা রিপন বলেন, ‘দেশে এখন সব কিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে। ক্যাম্পাসেরও প্রশাসন ভবন থেকে শুরু করে সব চলছে। কিন্তু কেন তারা আবাসিক হলগুলো খুলে দিচ্ছে না? ক্যাম্পাসের আশেপাশে যথেষ্ট আবাসনের ব্যবস্থা নেই। মেস মালিকদের কাছে আমরা জিম্মি অবস্থায় আছি। মেস মালিকরাও ২/৩ গুণ ভাড়া বাড়িয়েছে। মেয়েদের নিরাপত্তা ঝুঁকি তো আছেই। আমাদের দাবি, আজকের মধ্যেই হল খুলবে না-কি খুলবে না প্রশাসনকে স্পষ্ট জানাতে হবে। নাহলে আমাদের আন্দোলন চলবে। ’
পরে বিকেল ৫ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তাদের দাবির বিষয়ে কথা বলতে শিক্ষার্থীদের প্রক্টরের কার্যালয়ে ডাকেন। এসময় শিক্ষার্থীরা আগামী ৮তারিখের মধ্যে হল খোলার দাবি জানান। পাশাপাশি ৮তারিখের ভেতর হল খোলা না হলে আবারো আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়ে আসেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড জাহাঙ্গীর হোসেন তাদের দাবির সাথে একমত পোষন করেন। পাশাপাশি আগামী ৪অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে হল খোলার সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানান৷
এসময় তিনি বলেন, 'শিক্ষামন্ত্রণালয় এবং ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী প্রসিডিউর গুলো সম্পন্ন করতে আমাদের একটু লেট হয়ে গেছে। যার কারণেই হল খোলার সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগছে। ভিসি স্যারকে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে জানাবো। আশা করি তিনি দ্রুতই কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবেন। ’
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৫ ঘন্টা, ০১ অক্টোবর, ২০২১
এমএমএস