ঢাকা: শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, করোনা মহামারির মধ্যে এ বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী ১৪ নভেম্বর। করোনা আক্রান্ত কোনো শিক্ষার্থী চাইলে হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা দিতে পারবে।
এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে বুধবার (২৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
পরীক্ষার্থী কেউ করোনা আক্রান্ত হয়ে গেলে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, যদি কেউ আক্রান্ত হয় সে তো পরীক্ষা দিতে আসতে পারবে না। তারপরেও যদি কেউ পরীক্ষা দিতে চায় তাহলে সেক্ষেত্রে আমরা স্ব স্ব বোর্ড থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে, যদি হাসপাতালে ভর্তি থাকেন তাহলে সেই হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে ব্যবস্থা করে পরীক্ষা নিতে পারে। সেটা আমরা অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবো।
তিনি বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব রাখার জন্য অভিভাবকদের অনুরোধ করছি। অভিভাবকরা কেন্দ্রে না এলেই ভালো, যদি আসতেই হয় তাহলে একজনের বেশি যেন না আসেন। যদি আসেন তারা যেন কেন্দ্রের সামনে ভিড় না করেন। তারা যেন দূরে অবস্থান করেন।
১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের টিকা কার্যক্রম শুরুর পর এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অবশ্যই যারা পরীক্ষার্থী, আমরা স্কুল ধরে ধরে (টিকা) দেবো। যারা পরীক্ষার্থী তাদের সর্বাগ্রে যেন দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তাতে হয়তো একই দিনে এক স্কুলে সবারকে টিকা দেওয়া হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার্থী এবং ১২ বছরের বেশি যারা তারা সবাই টিকা পেয়ে যাবে।
এবারের পরীক্ষার বিষয় কমানোতে মূল্যায়নের সমস্যা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় না। গতবছর আমরা সাবজেক্ট ম্যাপিং করে যেটা করেছি সেটার সঙ্গে তার আগের তিন বছরের ফলাফল মিলিয়ে দেখেছি। এতটাই সামঞ্জস্যতা ছিল।
বিভিন্ন প্রতিবেদনে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার তথ্য এবং এসএসসিতে প্রায় দুই লাখ পরীক্ষার্থী বেড়ে যাওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আপনি এখন কী কনক্লুশন ড্র করবেন এটা আপনার ওপরে। আমাদের তথ্য বলছে এ বছর প্রায় দুই লাখের কাছাকাছি পরীক্ষার্থী বেড়েছে।
নির্বাচনী পরীক্ষা না হওয়ায় কি বেড়েছে আরেক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, হতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়ার গুজব নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সভায় এটা আলোচনা হয়েছে। সব গুজব বন্ধ করা যাবে কিনা, তবে পরীক্ষার জন্য যেটি ক্ষতিকর সেটা প্রশ্ন ফাঁসের গুজব। সেটি আমরা গত কয়েক বছর জেনেছি, এটা যে গুজব সেটা জানতে পেরেছি। যারাই এ ধরনের গুজবের সঙ্গে জড়িত থাকবে, প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকবে তাদের ধরার ব্যাপারে সব গোয়েন্দা সংস্থা এখন থেকেই তীক্ষ্ণ নজরদারি করছে।
টিআইবির প্রতিবেদনে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা পুরো রিপোর্টটি দেখেছি। পুরো রিপোর্টটির মধ্যে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগে যে কথাটি বলেছে, এখন সরকারিতে পিএসসির মাধ্যমে এবং বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে। এছাড়া শুধু প্রধান শিক্ষক... এবং গ্রন্থাগারিকদের বিষয়টা এনটিআরসিএর মাধ্যমে হবে। তারা যে কথাটি বলেছে, সেটা এখন আর প্রযোজ্য নয়। ম্যানেজিং কমিটির বিষয় নিয়ে যা বলেছে, সে বিষয়গুলো নিয়ে বহু আগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সে কারণে ওই রিপোর্টের আর খুব একটা ভ্যালু আমি দেখি না। কিন্তু কেউ কোনো বিষয় খতিয়ে দেখলে আমাদের জন্য ভালো, আমাদের জন্য স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা অনেক সহজ হয়। তবে সেটি নিরপেক্ষভাবে হতে হবে।
শিক্ষা আইন চূড়ান্ত করা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আইন তৈরি একটা লম্বা প্রক্রিয়া। আমাদের কাজ সম্পন্ন করেছি। এখন এটি কেবিনেটে যাবে। কেবিনেট থেকে চূড়ান্ত ভোটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে বা কেবিনেট কিছু অবজারভেশন দিয়ে পাস করে দিতে পারে। এরপর সেটি সংসদে যাবে। আইনি প্রক্রিয়াটি আমাদের হাতে নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২১
এমআইএইচ/আরআইএস