ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জবিতে আবারও সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর দাবি

মহিউদ্দিন রিফাত, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২১
জবিতে আবারও সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর দাবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে সান্ধ্যকালীন কোর্স। তবে কোর্স বন্ধ থাকলেও থেমে নেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ক্লাস নেওয়া।

শিক্ষকদের একাংশ নিয়মিত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিচ্ছেন। তাই জবিতে আবারও সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। একইসঙ্গে কোর্স বন্ধ থাকার পেছনে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বর্তমানে ঢাকার ভেতরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও জবিতে সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ রয়েছে। তবে শহরের বাইরে থাকা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত সান্ধ্যকালীন কোর্সের ভর্তি কার্যক্রম ও পাঠদান চলছে।

শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যেই কোর্স করতে ১৭ হাজার টাকা লাগে, সেই একই কোর্স জবিতে মাত্র সাড়ে ৭ হাজার টাকায় করা যায়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার গুণগত মানও ভালো। আর ঢাকার ভেতরে সান্ধ্যকালীন কোর্সের শিক্ষার্থীই বেশি। অনেকে চাকরির পাশাপাশি কোর্স করেন। শিক্ষার মান ও খরচ বিবেচনা করে তারা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি না হয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এর ফলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী ও অর্থ হারাচ্ছে। অবশ্য সে কারণেই কৌশলে ঢাকার দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ রাখা হয়েছে বলে ধারণা শিক্ষকদের।

২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর জবি কর্তৃপক্ষ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি না করার কথা জানায়। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ রয়েছে। তবে গত ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের আগে নীল দলের দুই গ্রুপ নির্বাচনী ইশতেহারে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর দাবি রাখেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আবদুল মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, শুক্র ও শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকে। এ সময় দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা সান্ধ্যকালীন কোর্স করার সুযোগ পায়। বিশ্বের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কোর্স চালু রয়েছে। সেখানে দেশ-বিদেশের শিক্ষার্থীরা ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ পায়। কিন্তু আমাদের দেশের কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রোগ্রাম বন্ধ। এতে করে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কোর্স করছে। এতে টাকাও বেশি লাগছে, আবার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব কোর্সের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ থাকার পেছনে ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে আমার ধারণা।  

অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সেশনজট ও বিভিন্ন কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেশনাল কোর্স বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ঠিকই বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিচ্ছেন। অনেক সময় তারা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মাস্টার্স কোর্সে দুই সেমিস্টারে ১০টি কোর্স পড়ানো হয়। কিন্তু সান্ধ্যকালীন কোর্সে মাস্টার্সে চারটি সেমিস্টারে ২০টি কোর্স পড়ানো হয়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকালীন কোর্সের মানের চেয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখার মান অনেক ভালো।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. ইমদাদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর বিষয়ে আমাদের ইচ্ছে আছে। আমাদের শিক্ষকরা মানের দিক থেকে সেরা। এ বিষয়টি নিয়ে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আমরা আলোচনা করে সিন্ধান্ত নেব। শিক্ষকরা রাজি থাকলে ইউজিসির সঙ্গে কথা বলে খুব শীঘ্রই আমরা চালু করতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু করলে আমরা নীতিমালা ঠিক করে দেবো। কোন কোন বিভাগ চালু করতে পারবে, চালু করলেও কয়টা ব্যাচ ভর্তি নিতে পারবে এটার একটা নীতিমালা থাকবে। কোনোভাবেই যাতে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সমস্যা না হয়, এটা আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২১
এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।