ঢাকা: আসন্ন এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১১টি শিক্ষা বোর্ডে এ বছর মোট ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও ইতিবাচক পরিবেশে সম্পন্ন করতে বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) সচিবালয়ে জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।
সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর তত্ত্বীয় বিষয়ে পরীক্ষা আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ৩০ ডিসেম্বর শেষ হবে। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় বিষয়ের পরীক্ষা ২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ১৯ ডিসেম্বর শেষ হবে। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় বিষয়ের পরীক্ষা ২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ৮ ডিসেম্বর শেষ হবে।
এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডে ৯ হাজার ১৮৩টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ২ হাজার ৬২১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৮ জন ও ছাত্রী ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫২ জন।
৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এইচএসসিতে ১১ লাখ ৩৮ হাজার ১৭ জন, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের আলিম পরীক্ষায় ১ লাখ ১৩ হাজার ১৪৪ জন ও কারিগরিতে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫০৩ জন অংশ নেবে।
২০২০ সালে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন। গতবারের তুলনায় মোট পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৩৩ হাজার ৮৭৫ জন। মোট প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ১২০টি ও কেন্দ্র বেড়েছে ২০টি।
বিদেশের ৮টি কেন্দ্রের মোট পরীক্ষার্থী ৪০৬ জন। এর মধ্যে জেদ্দা ১১৪, রিয়াদ ৭৪, ত্রিপলী ২, দোহা ৭৯, আবুধাবী ৩৪, দুবাই ২৬, বাহরাইন ৫৮, ওমানের সাহামে ১৯ জন।
মানতে হবে যেসব নির্দেশনা
পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে এরপরে প্রবেশ করতে দিলে তাদের নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে ওইদিনই সংশ্লিষ্ট বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে।
ট্রেজারি থেকে নির্দিষ্ট তারিখের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সব সেট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে। ট্রেজারি থেকে প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নির্ধারিত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এসএমএসর মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশ্নপত্রের সেট কোড জানিয়ে দেওয়া হবে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যতিত অন্য কেউ মোবাইল ফোন/ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। শুধু ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ছবি তোলা যায় না।
পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ব্যতিত অন্য কেউই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে/সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য অভিভাবকদের অনুরোধ করা হয়েছে।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্ৰুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ১০ মিনিট সময় বাড়ানো হয়েছে।
প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল পালসি) পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বাড়ানোসহ শিক্ষক/অভিভাবক/সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালের সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে গ্রুপভিত্তিক ৩টি নৈর্বাচনিক বিষয়ে ৬টি পত্রে পরীক্ষা হবে।
সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক নোটবুকের পাওয়া নম্বর অনলাইনে বোর্ডে পাঠাবে।
বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার্থীদের মধ্যকার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এ বছর বিজ্ঞান বিভাগ, মানবিক বিভাগ, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থীদের একই সময়ে পরীক্ষা গ্রহণ না করে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।
পরীক্ষা শেষে এক মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশিত হবে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ অংশ নেন। অনলাইনে যুক্ত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২১, আপডেট: ১৯১১ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এসআইএস/আরবি