ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় ও লুম্বিনি লিমিটেডের সঙ্গে আইইউবি’র সমঝোতা সই

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২২
বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় ও লুম্বিনি লিমিটেডের সঙ্গে আইইউবি’র সমঝোতা সই

ঢাকা: বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় এবং তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান লুম্বিনি লিমিটেডের সঙ্গে ভাষা এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক দুটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি (আইইউবি)।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) বান্দরবান পার্বত্য জেলা সদরে অবস্থিত বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে এই চুক্তিগুলো সই হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, এমপি।

নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আইইউবি'র উপাচার্য তানভীর হাসান, পিএইচডি; বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. ইমাম আলী; এবং লুম্বিনি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মো. সুলতান উদ্দিন ইকবাল সমঝোতা স্মারকগুলোতে সই করেন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লুম্বিনি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাদাত মোশাররফ খান।

প্রথম সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষর হয় আইইউবি এবং বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে। এতে বলা হয়েছে, পার্বত্য তিন জেলার বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর লুপ্তপ্রায় ভাষা সংরক্ষণে আইইউবি'র সেন্টার ফর এনডেনজারড ল্যাংগুয়েজেসের সঙ্গে যৌথভাবে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করবে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়। এই সেন্টার ফর এনডেনজারড ল্যাংগুয়েজেস আইইউবি'র সাশিন সেন্টার ফর মাল্টিলিংগুয়াল এক্সেলেন্সের অন্তর্গত একটি স্বতন্ত্র বিভাগ। পাশাপাশি, বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা উন্নয়নেও সহযোগিতা করবে আইইউবি।  

আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয় আইইউবি, বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় এবং লুম্বিনি লিমিটেডের মধ্যে। এতে বলা হয়, বান্দরবান-ভিত্তিক তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান লুম্বিনি লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায়, বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের দু'জন বাছাইকৃত নারী শিক্ষার্থী প্রতি বছর দুটি করে সেমিস্টার ঢাকায় অবস্থিত আইইউবি ক্যাম্পাসে পড়াশোনার সুযোগ পাবে। তাদের মধ্যে অন্তত একজন শিক্ষার্থীকে হবেন কোনো একটি নৃ-গোষ্ঠীর সদস্য। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু হয়ে এই কার্যক্রমটি চলবে পরবর্তী চার বছর। এছাড়াও, প্রতি বছর বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের দু'জন করে শিক্ষার্থী লুম্বিনি লিমিটেডের ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পাবে। এই খাতে প্রতি বছর প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য আড়াই লাখ টাকা করে মোট পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দেবে লুম্বিনি লিমিটেড।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের ছেলেমেয়েদের মধ্যে পড়াশোনার ব্যাপারে আগ্রহ আছে। কিন্তু সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটানো তাদের অনেকের পরিবারের পক্ষেই কঠিন। শিক্ষাটা যদি তাদের ঘরের দুয়ারে পৌঁছানো যায়, তাহলে এখানকার ছেলে-মেয়েরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারবে।

আইইউবি'র উপাচার্য তানভীর হাসান বলেন, শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড এবং মাতৃভাষাই শিক্ষার মূল বাহন হওয়া উচিৎ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যেই মারমা, চাকমা এবং ত্রিপুরা ভাষায় শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেছে, যা নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কিন্তু, এর বাইরেও দেশের বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর অনেক ভাষা রয়েছে যেই ভাষাগুলোকে এখনো শিক্ষাদানের মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি। এর ফলে সেই ভাষাগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে পারে এরকম একটা আশঙ্কা রয়েছে। এই চিন্তা থেকেই, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লুপ্তপ্রায় ভাষাগুলো নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্যে, সেন্টার ফর এনডেনজার্ড ল্যাংগুয়েজেস প্রতিষ্ঠা করেছে।

বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. ইমাম আলী বলেন, আইইউবি যে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার কথা বলছে, এই সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় সেই চিন্তাকে ধারণ করতে চায়। আমরা শুধু শিক্ষার্থীদের সনদপত্রই দিতে চাই না, আমরা চাই তাদেরকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে। এর পাশাপাশি, আমরা চাই তাদের মধ্যে যেন মানবিক গুণাবলিরও বিকাশ ঘটে।

লুম্বিনি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মো. সুলতান উদ্দিন ইকবাল বলেন, আজকে যে সমঝোতা স্মারকগুলো আমরা সই করলাম, তার মাধ্যমে বান্দরবান জেলায় নারীর ক্ষমতায়নে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২২
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।