ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

এক যুগ ধরে মুসলিম শিক্ষক নেই শ্রীমন্তকাঠি স্কুলে!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২২
এক যুগ ধরে মুসলিম শিক্ষক নেই শ্রীমন্তকাঠি স্কুলে!

ঝালকাঠি: প্রধান শিক্ষক কল্পনা রানি ইন্দু, সহকারী শিক্ষক শেফালী রাণী মিস্ত্রি, চিন্ময়ী রায়, মিতা মিত্র, প্রভাতি হালদার, সুপ্রিয়া রাণি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭ জন শিক্ষকের ৬ জনই সনাতন ধর্মাবলম্বী।

বাকী সহকারী শিক্ষকের পদটি শুন্য রয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে নেই দ্বিতীয় আরেকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়।  

বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও অনেক। হিন্দু-মুসলিম শিক্ষার্থীর সংখ্যাও সমান সমান। ফলাফলের দিক থেকেও বিদ্যালয়ে রয়েছে বেশ সফলতা। তবে বিপত্তি ইসলাম শিক্ষা বিষয়ে পাঠদান নিয়ে। মুসলিম কোনো শিক্ষক না থাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষকরাই পাঠদান করাচ্ছেন ইসলাম শিক্ষার।  

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদান মৌলিক জ্ঞান থেকে সনাতন শিক্ষকরা দিতে পারলেও তৃতীয় চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণির পাঠদানের হিমসিম খেতে হচ্ছে তাঁদের। ইসলাম শিক্ষা বইয়ের আরবী দেখে পড়তে না পারলেও বাংলা উচ্চারণ দেখে মুসলিম শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। ঝালকাঠি সদর উপজেলার ৮৮ নম্বর শ্রীমন্তকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় ধরে ইসলাম ধর্মের অনুসারী কোনো মুসলিম শিক্ষক না থাকায় টেনে-টুনে সনাতন ধর্মের শিক্ষক দিয়ে দায়সারাভাবে ইসলাম শিক্ষা পড়ানো হচ্ছে।

ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক চিন্ময়ী রায়, মিতা মিত্র ও প্রভাতি হালদার বাংলানিউজকে জানান, আমরা ইসলাম ধর্মের পাঠদান করাই। আরবী দেখে উচ্চারণ করতে না পারলেও বাংলা উচ্চারণ দেখে পড়াই। যদিও আরবীর বাংলা উচ্চারণ সঠিক ও শুদ্ধ হচ্ছে না তা আমরা বুঝি। কিন্তু পাঠদান তো করাতে হবে। আরবী লেখা বাদে বাংলাতে যা আছে তা পড়ালে শিক্ষার্থীরাই ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করতে পারছে। অনেকসময় অভিভাবকরা আমাদের পাঠদানে বলার সময় ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন কাহিনী দরজার পাশে দাঁড়িয়ে শোনেন।  

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কল্পনা রানি ইন্দু বাংলানিউজকে বলেন, এ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম ২০০৯ সালে একটি দুর্ঘটনায় নিহত হন। এরপর ২০১০ সালের শুরুতে যোগদান করার পর থেকে আর কোনো মুসলিম শিক্ষক আসেনি। এখানের ছাত্রের সংখ্যাও বেশি, ফলাফলও অনেক ভালো। হিন্দু-মুসলিম শিক্ষার্থীও প্রায় সমান সংখ্যক। তারপরেও শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনেকবার মুসলিম শিক্ষক চেয়ে আবেদন করেছি তারা পদায়ন করেনি। বাধ্য হয়েই সনাতন ধর্মের শিক্ষকরা ইসলাম ধর্ম পাঠ করাচ্ছেন। এভাবেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।  

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, আমাদের শিক্ষক পদায়ন-বদলি এখন বন্ধ রয়েছে। বিকল্প হিসেবে আমরা সংযুক্তির মাধ্যমে শিগগিরই একজন মুসলিম শিক্ষককে দিবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।