ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

সাবনূরকে মেডিক্যালে পড়ানোর দায়িত্ব নিল বসুন্ধরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
সাবনূরকে মেডিক্যালে পড়ানোর দায়িত্ব নিল বসুন্ধরা

মেডিক্যালে সুযোগ পাওয়া পিরোজপুরের দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থী সাবনূরের পড়ালেখার দায়িত্ব নিলো দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। স্বরূপকাঠি উপজেলার জলাবাড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ কামারকাঠি গ্রামের দিনমজুর বাবুল মোল্লার মেয়ে তিনি।



এ বছর মেডিক্যালের ভর্তি পরীক্ষায় ৭৩ দশমিক ৫ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় ৩৮৮৯তম স্থান অর্জন করে জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছেন সাবনূর। মেয়ের এই সফলতায় বাবা-মা যারপরনাই খুশি। কিন্তু দারিদ্রতার কারণে মেয়ে সেখানে পড়তে পারবে কিনা তা নিয়ে চরম দুঃশ্চিন্তায় ছিল পরিবার।  

সাবনূরের মেডিক্যালে সুযোগ পাওয়া নিয়ে তার বাড়িতে গেলে জানা যায়, তার বাবা বাবুল মোল্লা এক সময় কাঁচামালের ব্যবসা করতেন। নয় বছর পূর্বে তিনি অ্যাজমায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এখন দিনমজুরের কাজ করেই তার জীবন কাটছে। বাবুল মোল্লার চিকিৎসা ও সংসারের খরচ চালাতে গিয়ে পরিবারটি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। সন্তানদের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ মেটাতে বাবুলের স্ত্রী সাবিনা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। সাবনূরকে অনেক সময় অনাহারে অর্ধাহারে থেকেই লেখাপড়া করতে হয়েছে। তার বাসা থেকে কলেজের দূরত্ব প্রায় পাঁচ কিলোমিটার।

আরও পড়ুন: মেডিক্যালে ভর্তির সুযোগ পেয়েও দুশ্চিন্তায় সাবনূর

প্রতিদিন হেঁটেই কলেজে যাওয়া-আসা ছিল তার। মেডিক্যালে সুযোগের পর সাবনূরসহ তার পরিবারের মনে শঙ্কা, সেখানে পড়তে পারবে তো! নাকি তার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে।  

পরে এ নিয়ে তাকে নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে সাবনূরের পাশে দাঁড়ায় বসুন্ধরা গ্রুপ। তারা সাবনূরের পড়ালেখার সকল দায়িত্ব গ্রহণ করে। এদিকে, এ খবর পেয়ে সাবনূর ও তার পরিবারের দুশ্চিন্তা কেটেছে, দারুণ খুশি তারা।  

আবেগে আপ্লুত সাবনূরের বাবা-মা জানান, মেয়ের লেখাপড়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলাম। দারিদ্রতার কারণে মেয়েকে ডাক্তার বানাতে পারবো কিনা তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। বসুন্ধরা গ্রুপের কল্যাণে আজ আমাদের স্বপ্ন পূরণ হতে চলছে। তারা সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।  

সাবনূর বলেন, দারিদ্রের কষাঘাতের মধ্য দিয়ে অনেক কষ্ট করে আমি পড়ালেখা করেছি। আমি স্বপ্ন দেখতাম ডাক্তার হবো, ডাক্তারি পোশাকে আমি রোগীদের সেবা করবো। কিন্তু দারিদ্রতার কারণে আমার সেই স্বপ্ন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছিল। বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতায় এখন আমি মেডিক্যালে পড়ালেখা করতে পারবো। বসুন্ধরা গ্রুপের এ অবদান আমি চিরদিন মনে রাখবো। ভাবিষ্যতে আমি একজন মানবিক ডাক্তার হয়ে দেশ ও দেশের জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে চাই।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।