ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

রেলে অব্যবস্থাপনা-হয়রানি, ঢাবি ছাত্রের ৬ দফা

মাছুম কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২১ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২২
রেলে অব্যবস্থাপনা-হয়রানি, ঢাবি ছাত্রের ৬ দফা

ঢাকা : বাংলাদেশ রেলওয়ের বর্তমান টিকিট ব্যবস্থা, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও যাত্রী হয়রানি বন্ধের দাবিতে কমলাপুর স্টেশনে একাই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।

গত বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) থেকে ৬ দফা দাবি নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন রনি।

জিজ্ঞেস করলে বলেন, রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনে এ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

ঢাবির থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের এ ছাত্রের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। পড়াশোনার পাশাপাশি একজন ভ্রমণকারী হিসেবেও তিনি বন্ধুমহলে পরিচিত। ঢাবির ছাত্র হওয়ায় বসবাস করেন শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে। রাজশাহী ভ্রমণের জন্য ট্রেনের টিকিট কাটতে গিয়ে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হন রনি। তারপরই মূলত নিজের কর্মসূচির পরিকল্পনা করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলানিউজকে রনি বলেন, রেলওয়ের ই-টিকিট সিস্টেম সহজ ডটকম নামে একটি অনলাইন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এর মাধ্যমে টিকিট কাটতে গিয়ে দেশের লাখ লাখ মানুষ ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। আমিও তাদের মধ্যে একজন।

গত ১৩ জুন আমি রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে ঢাকা-রাজশাহীর সিট নেওয়ার চেষ্টা করি। বিকাশ থেকে ভ্যারিফিকেশন কোড দেওয়া হয়। কিন্তু পিন না দিলেও বিকাশ থেকে মূল্য কেটে নেওয়া হয়। অথচ আমার নামে কোনো সিট বুকিং দেওয়া হয়নি, এমনকি কোনো ডকুমেন্টও নয়। তাহলে কী কারণে আমার কাছ থেকে টাকা কেটে নেওয়া হলো?

তিনি আরও জানান, এ ঘটনার পর তিনি দ্রুত কমলাপুর রেলস্টেশনে রেলওয়ের সার্ভার রুমে অভিযোগ করেন। সেখান থেকে বলা হয়, সিস্টেম ফল করেছে; ১৫ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত না পেলে আসবেন। অথচ তার চোখের সামনেই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তার বুকিং করা সিট আরেক গ্রাহকের কাছে নগত ১২০০ টাকায় বিক্রি করেন স্টেশনের কম্পিউটার অপারেটর। অথচ সিটের মূল্য ৬৮০ টাকা।

এরপর ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে অভিযোগ করেন রনি। গত ১৪ ও ১৫ জুন দুবার অভিযোগ করেন তিনি। তবে, এখন পর্যন্ত অধিদপ্তর থেকে শুনানির কোনো ডাক আসেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে খোঁজ নেন রনি। সেখান থেকে জানতে পারেন, তার মতো হাজারো মানুষ একই সমস্যার সম্মুখীন।

রনি বলেন, ভোক্তা অধিকারের কোনো সাড়া না পাওয়ায় অনেকেই আমাকে হাইকোর্টে রিট করার পরামর্শ দেন। এ ব্যাপারে কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা সরকারি এত বড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রিট পরিচালনা থেকে সরে আসতে বলেন।

যেহেতু একার পক্ষে এ কাজ করা অত্যন্ত কঠিন, তাই আমি জনগণের দুয়ারে এসেছি।

কমলাপুর রেলস্টেশন, বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তন ও সহজ ডটকমের যাত্রী হয়রানির প্রতিবাদে ৬ দফা দাবি নিয়ে গণস্বাক্ষর ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন রনি। তার দাবিগুলোরে মধ্যে রয়েছে, সহজ ডটকম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে অথবা সহজকে বয়কট; টিকিট সিন্ডিকেট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ; টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সর্ব সাধারণের সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতকরণ; ট্রেনের জনসাধারণের জানমালের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্য সম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ; ট্রেনের সিট সংখ্যা বা ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো; একইসঙ্গে সঠিক সেবার মান ও তথ্যের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে শক্তিশালী মনিটরিং টিম গঠন।

এ বিষয়ে কথা বলতে কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ারকে একাধিকার ফোন কর হয়। কিন্তু ওপার থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।

এর আগে ঢাবির মেডিকেল সেন্টারের নানা সমস্যা নিয়ে অনশন করেছিলেন রনি। পরে ভিসি ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের আশ্বাসে অনশন ভাঙেন। ৭ জুলাই থেকে নতুন করে তার কর্মসূচির ব্যাপারে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা শুরু হলে তাকে অনেকেই সমর্থন জানান।

বাংলাদেশ সময় : ১১২০ ঘণ্টা, ১১ জুলাই, ২০২২
এমকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।