ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

উচ্চশিক্ষায় বয়সের দেয়াল চান না শিক্ষামন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪২ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২২
উচ্চশিক্ষায় বয়সের দেয়াল চান না শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি

ঢাকা: যেকোনো বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ কেন থাকবে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, উচ্চশিক্ষার সুযোগ সারা বিশ্ব যখন অবারিত করছে, তখন কেন আমরা দেয়াল তুলছি?

বুধবার (২০ জুলাই) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের সম্মেলন ও উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক, ইউজিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) দিল আফরোজা বেগম।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেসবাহউদ্দিন আহমেদ।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে অনেক কিছু করার আছে। যখন সারা বিশ্ব সব কিছুতে সুযোগ অবারিত করার কথা বলছে, মানসম্মত শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে আমরা যখন বলছি জীবনব্যাপী শিক্ষা, তখন আমরা সব জায়গায় কেন দেয়াল তুলছি? তখন কেন এই নির্দিষ্ট বয়সে ভর্তির কথা বলছি। কেনও বলছি একবারের বেশি ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবো না। কেন আমরা বলছি এক বিষয়ে পড়ে এলে অন্য বিষয় পড়া যাবে না।  আমার কাছে এটি বোধগম্য নয়। আমি আইন নিয়ে পড়েছি, কেন আমি ডিপ্লোমা ইঞ্জিয়িনিয়ারিং নিয়ে পড়তে পারবো না? আমি পদার্থ, রাসায়ন পড়ছি হঠাৎ আমার মনে হলো আমি অন্য বিষয়ে পড়বো, তাহলে কেন আমি অন্য বিষয়ে তখন ভর্তি হতে পারবো না? সারা পৃথিবীতে পড়ানো হচ্ছে, কেন বাংলাদেশে হবে না। এ বিষয়গুলো দেখতে হবে। যারা ভর্তি হতে চাচ্ছে তাদের তো পরীক্ষার মাধ্যমে মেধা যাচাই করেই নেবেন, এমনি এমনি তো নেবেন না। তাহলে একবারের বেশি সে কেন ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে না। শিক্ষার্থীর জীবনের সব পথ বন্ধ করে দেওয়া বোধহয় ঠিক না।

দীপু মনি বলেন, শুধু শিক্ষার্থী ভর্তি করছি। কতটা আমার জায়গা আছে, কত শিক্ষার্থীকে সবধরনের সুবিধা দিয়ে সঠিক শিক্ষার পরিবেশ দিতে পারবো তা মাথায় নিচ্ছি না। কত বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারছি তা নিয়ে আমরা ব্যস্ত। প্রধানমন্ত্রী বার বার বলছেন- ফিজিক্যাল মাস্টারপ্লান ও অ্যাকাডেমিক মাস্টারপ্লানের কথা। একশ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় যে বিষয়টি খুলেছিলো সেটি কী আজকের জন্য একইভাবে প্রতিটি বিষয় প্রাসঙ্গিক কি-না? সেটি দেখতে হবে।  

অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে মান নির্ণয় করা হচ্ছে শুধু তা না, প্রতিষ্ঠান নিজেই যে সেলফ অ্যাসেসমেন্ট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় তার মধ্য দিয়ে নিজেই মান বাড়াতে পারে। আমাদের অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের পথচলা শুরু হয়েছে তার সুফল সকল প্রতিষ্ঠান পেতে শুরু করবে।

 দীপু মনি বলেন, আমরা গ্লোবাল ভিলেজে বসবাস করি। কাজেই আমাদেরকে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে চলতে হবে। সেখানে সেই মানের সঙ্গেও নিজেদেরকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের জন্যই অ্যাক্রেডিটেশনের প্রসেসটা খুব জরুরি। নিজেদেরকে বিশ্বমানের করবার জন্যই অ্যাক্রেডিটেশনের প্রয়োজন।  

তিনি বলেন, অনেক সময় আমার কাছে মনে হয়, একটু মনে হয় উন্নাসিকতা আমাদের মধ্যে আছে যে, আমি ভালো পড়াচ্ছি। আমরা ভালো পড়াচ্ছি।  কিন্তু সেই সনদ সে কতটুকু কাজে লাগাতে পারছে? তার কর্ম জগতে কতটুকু ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারছে, সেটা দেখাও আমাদের দেখা দায়িত্ব। আমার মনে হয় সে দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সে কারণে আমাদেরকে কর্ম জগতের চাহিদার কথা মাথায় রাখতে হবে। সেজন্য আমাদের উচ্চ শিক্ষায় কোথায় কোথায় সমস্যা আছে সেগুলো নিরূপণ করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, ২০ জুলাই, ২০২২
এমআইএইচ/ইআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।