শাবিপ্রবি, (সিলেট): ‘সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে মোরা পরের তরে’ কামিনী রায়ের সেই সুখ কবিতার ব্রত নিয়েই যেন এগিয়ে যাচ্ছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'স্বপ্নোত্থান'। এতে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের স্বপ্নপূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবীরা।
নিজেদের পড়াশোনার পাশাপাশি কর্মব্যস্ত বিভিন্ন পেশায় জড়িত কিশোর, যাদের পড়াশোনার সুযোগ কম, যারা ধরেছে সংসারের হাল, যাদের পরিবারের সদস্যদের মুখে দুবেলা খাবার তুলে দিতে দিনের পুরোটা সময় কাজ করেন নানান প্রতিষ্ঠানে কাজ করে যাচ্ছে। সেসব সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ভোলানন্দ নৈশ বিদ্যালয়ে তাদের কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিচ্ছে সংগঠনটির সদস্যরা।
এছাড়া শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি চ্যারিটি আয়োজন, রক্তদান কর্মসূচি নিয়েও কাজ করে সংগঠনটি। এতে প্রতিদিন সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিকে দুরারোগ্য মানুষদের রক্ত সরবরাহে কাজ করে সংগঠনটি। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতেও বিভিন্ন চ্যারিটিমূলক ফেস্টের আয়োজন করে সংগঠনটি।
এদিকে শিক্ষা, চ্যারিটি ও রক্তদানের বাহিরে যেকোনো উৎসব ও দেশের দুর্যোগে সমাজের দরিদ্র মানুষের আনন্দ ও স্বপ্নপূরনের সঙ্গী হন সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবীরা। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে চা শ্রমিক, বেদে পল্লীর পরিবারগুলোতে সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে নতুন বস্ত্র ও উপহার সামগ্রী দিয়ে থাকেন সংগঠনের সদস্যরা। পাশাপাশি হাড় কাঁপানো শীত থেকে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দিতে শীতবস্ত্র কর্মসূচি আয়োজন করে সংগঠনটি। এতে ক্যাম্পাসের আবাসিক হল, আশেপাশে গ্রাম ও শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে শীত ও অনুদান সংগ্রহ করে শীতবস্ত্র বিতরণ করে সংগঠনটি।
সম্প্রতি সিলেটে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বন্যায়ও বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সংগঠনটি। এতে বন্যায় ডুবে যাওয়া প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ করেছে পাশাপাশি তাদের পুনর্বাসন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সংগঠনটি। এছাড়াও সমাজের তৃতীয় লিঙ্গ হিজড়া জনগোষ্ঠীর সামাজিক অধিকার নিয়ে কাজ করছে বলে জানান সংগঠনটির নেতারা।
এ বিষয়ে স্বপ্নোত্থানের সভাপতি ধীমান দাস দিব্য বলেন, স্বপ্নোত্থান সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে কাজ করে থাকে। স্বপ্নোত্থান বিশেষ করে চ্যারিটি উইং, ব্লাড উইং এবং স্কুল উইং নিয়ে কাজ করছে। এছাড়া 'বন্যার্তদের পাশে স্বপ্নোত্থান' পুনর্বাসনের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ এ পথচলায় আমাদের পাশে থাকার জন্য স্বপ্নোত্থানের সব স্বেচ্ছাসেবী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিতদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, দীপ শিখা হতে স্বপ্নের পথে’ স্লোগানকে সামনে রেখে ২০০৭ সালের পহেলা আগস্ট স্বপ্নবাজ শফিকুর রহমানের হাতে ধরে গড়ে উঠে স্বপ্নোত্থান। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই সামাজিকভাবে অবহেলিত, দুস্থ ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটির সদস্যরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২২
এএটি