রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের একদল গুণ্ডাদের লালন-পালন করা হচ্ছে। তারা বছরের পর বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে নৈরাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ সিনেট ভবনের সামনে নিপীড়ন ছাত্র-শিক্ষক ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক নকীব আরও বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রাজনীতি নামে যে কর্মকাণ্ড চলছে সেটা সেই অর্থে রাজনীতি না। ছাত্র রাজনীতির মূল লক্ষ্য কল্যাণকামিতা। যে রাজনীতি শিক্ষার্থীদের ভালো চায় না সেটা কখনো ছাত্র রাজনীতি না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি বিশ্ববিদ্যালয় চরিত্রে দেখতে চাই। কিন্তু আমরা এর রেশ মাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখতে পাচ্ছি না।
আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল ইসলাম মাসউদ বলেন, এরা হায়েনা, তাণ্ডবকারী, সন্ত্রাসী। এদের ছাত্র পরিচয় দিতে লজ্জা লাগে। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সে পড়ালেখার পাশাপাশি পরিবারের খরচ চালানোর জন্য কিছু আয় করার চেষ্টা করছে। এমন একজন ছাত্রের কাছে ছুরি ঠেকিয়ে ছাত্রলীগ নেতা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় তাকে ডেকে নিয়ে তিন ঘণ্টা নির্যাতন করে। এই ছাত্রলীগ না পারে ছাত্রদের অধিকার আদায় করতে, না পারে সংগঠন চালাতে। তারা শুধু পারে শিক্ষার্থীদের অধিকার কেড়ে নিতে। গত কয়েকদিনে ঘটে যাওয়া প্রত্যেকটি ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।
সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, আজ একজন ছাত্র সাহস করে নির্যাতনের কথা বলেছে। তাই আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু এরকম অসংখ্য ঘটনা আছে যা আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। আবরারের মতো হত্যার হুমকি দিচ্ছে শিক্ষার্থীকে। কিন্তু এ সব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন দায়িত্বহীন বক্তব্য দিচ্ছে। প্রশাসনের দায়িত্বহীন কিছু শিক্ষকের অবহেলার কারণে শিক্ষার্থীরা নির্যাতিত হচ্ছে।
নাগরিক ছাত্র ঐক্যের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, রাবি ছাত্রলীগ এখন রুটিন মাফিক চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যিনি প্রক্সির 'গডফাদার' তার একাউন্টে ৪২ লাখ টাকা থাকে। সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ করে। কিন্তু প্রশাসন বলছে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না। তাহলে কিভাবে সে আবাসিক হলে থেকে দিনের পর দিন এই অপকর্ম করে। প্রশাসন কি জবাব দেবে না। তার বিরুদ্ধে কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নেওয়া হবে না কারণ আমরা দেখছি যে ফ্যাসিবাদী কাঠামো দেশে চালু আছে। এই ফ্যাসিবাদী কাঠামো যতক্ষণ না পর্যন্ত ভেঙে চুরমার করা হবে ততোদিন ছাত্রলীগ আপনাকে নির্যাতন করবে।
মানববন্ধনে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খানের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালের বাম সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন বিভাগের ৩০-৩৫ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২২
আরএ