ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে শিবির আখ্যা দিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার বিরূদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রউপদেষ্টা ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষিকার নাম মাহবুবা সিদ্দিকা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও খালেদা জিয়া হলের হাউজ টিউটর। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ভূগোল বিভাগের শিক্ষার্থী।
অভিযোগপত্রে ছাত্রী বলেন, ২৩ আগস্ট আমার সিট বরাদ্দের (খালেদা জিয়া হলের সিট বরাদ্দের জন্য সাক্ষাৎকার) ভাইভা অনুষ্ঠিত হয়। আমি সেদিন বোরখা পড়ে ভাইভায় উপস্থিত হই। ভাইভাতে আমাকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়। কোনোরকম সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও আমাকে শিবির বলে আখ্যায়িত করা হয় এবং হুমকি দেওয়া হয়।
শঙ্কিত হয়ে আমি বিষয়টি আমার কাছের এক ছাত্রলীগের ভাইকে জানাই। পরবর্তীতে একজন শিক্ষিকা আমাকে প্রভোস্ট কক্ষে ডেকে নানাভাবে হুমকি দেন। এতে আমি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত আছি।
ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে খালেদা জিয়া হলের হাউজ টিউটর নাজমুল হুদাকে আাহ্বায়ক করে তিন সদস্যের এক অনুসন্ধান কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্যরা হলেন, হলের হাউজ টিউটর নাহিদা আক্তার ও মেহেদী হাসান। খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রী ও একাধিক সূত্রে জানা যায়, ২৩ আগস্ট খালেদা জিয়া হলের সিট বরাদ্দের জন্য আবেদনকারী ছাত্রীদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় ওই ছাত্রীকে শিবির আখ্যা ও হুমকি দেয়ার ঘটনার পর ভুক্তভোগী তার আত্মীয় ছাত্রলীগের এক সাবেক নেতাকে বিষয়টি জানান।
সাবেক সেই ছাত্রলীগ নেতা বর্তমান এক ছাত্রলীগ কর্মীর মাধ্যমে শিক্ষিকা মাহবুবা সিদ্দিকার সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই ছাত্রীকে হেনস্তা না করার জন্য অনুরোধ করেন। এ ঘটনার জেরে ২৪ আগস্ট হল প্রভোস্টের কার্যালয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ডাকেন শিক্ষিকা মাহবুবা সিদ্দিকা।
ভুক্তভোগী হল প্রভোস্টের কার্যালয়ে গেলে ছাত্রলীগ নেতার মাধ্যমে অনুরোধ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে মাহবুবা সিদ্দিকা বলেন, ‘আমি রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলাম। চেনো তুমি আমারে? আমি কত পাওয়ার চালাইছিলাম তুমি জানো? তোমার এলাকার মেয়র টিটু ভাইকে চেনো? বইলা ওইখানে তোমারে পুইত্তা ফালামু। আমার বাড়ি কোথায় জানোস? আমার শ্বশুরবাড়ি কোথায় জানোস? আমার সাথে ফাইজলামি না? এলাকায়ও টিকতে পারবা না। ’
হুমকির বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক মাহবুবা সিদ্দিকা সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি আংশিক সত্য, আংশিক মিথ্যা। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীকে হুমকি দিতে পারে না, শাসন করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ওই ছাত্রীকে পরের বার ডাকা হয়েছে, কারণ সে বাইরে গিয়ে আরেকটা ছাত্রলীগের ছেলের কাছে বলেছে। আর সে আমার ছাত্রের মারফতে আমাকে থ্রেট করেছে।
ছাত্রউপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরীন বলেন, অভিযোগপত্রটি হাতে পেয়েছি। আগামীকাল শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে। একটু ব্যস্ততা রয়েছে। খুব শিগগিরই এটা নিয়ে বসবো।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। আমি ক্যাম্পাসের বাইরে থাকায় অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করতে পারিনি। কাল দেখবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২২
এমজেএফ