ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাপানি ‘কুমন’ পদ্ধতি শিশুদের শিক্ষার গুণগত মান সমৃদ্ধ করবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২২
জাপানি ‘কুমন’ পদ্ধতি শিশুদের শিক্ষার গুণগত মান সমৃদ্ধ করবে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।

সাভার, (ঢাকা): শিশু শিক্ষার্থীর জন্য সহজে গণিত ও ইংরেজি শিক্ষার জাপানি ‘কুমন’ পদ্ধতি দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চালু হলে বাংলাদেশের সর্বস্তরের শিশুদের শিক্ষার গুণগত মান অনেক সমৃদ্ধ হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।

শনিবার (৮ অক্টোবর) সাভারের বিরুলিয়ার ব্র্যাক সিডিএম এ অনুষ্ঠিত ব্র্যাক কুমন এএসআইচআর (অ্যাডভান্স স্টুডেন্ট হনার রোল) পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, ১৮ অক্টোবর  প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলে নভেম্বর বা ডিসেম্বরের মধ্যে ব্র্যক কুমনের সাথে বসে বাংলাদেশের ৩শটি স্কুলের ফিচারে আমরা কুমন প্রোগ্রামটি আগামী বছরে জানুয়ারি থেকে শুরু করবো। পরে ১৩ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাবেও এই কুমন পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে চাই।

প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এ সময় আরও বলেন, সাইবার হামলা ঠেকাতে প্রথমত ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি করা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা তৈরি করা, আইনের কঠোর প্রয়োগ করা, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সংস্থার সাথে তথ্যের আদান প্রদান করা এই চারটি বিষয়ে কাজ করছি। তরুণরা দেশের কল্যাণে কাজ করলে বর্তমান সরকার আরও অনেক শক্তিশালী হবে।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালেদ বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে কুমন পদ্ধতিতে আমাদের শিশুরা শিক্ষা গ্রহণ করে মেধার বিকাশ ঘটাতে পারবে। পাশাপাশি আগামী দিনে গুণগত শিক্ষা উন্নয়নে ‘কুমন’ হতে পারে একটা বড় দৃষ্টান্ত।  

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, বাংলাদেশে একুশের শতকের অর্থনীতিকে বিকশিত এবং শক্তিশালী করতে গুণগত শিক্ষার বিকল্প নেই। কুমন শিক্ষা পদ্ধতি দেশের সর্বস্তরে চালু হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পৃথিবী পরিবর্তনের পথে নিজেদের যোগ্য হিসেবে তৈরি করতে পারবে।

সৈয়দা সারওয়াত আবেদ বক্তব্যে বলেন, আমি জানি এই কুমন শিক্ষার্থীরাই একদিন ফিউচার লিডার হিসেবে সমাজকে নেতৃত্ব দেবে এবং তার জন্য যেসব গুণাবলী প্রয়োজন তা তারা কুমন মেথডের মাধ্যমেই শিখতে পারবে। এ লক্ষ্যে কুমন প্রোগ্রাম শেষ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সবার বক্তব্য শেষে অনুষ্ঠানে জাপানের বর্তমান রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি একটি রবীন্দ্র সঙ্গীত গান করেন।

বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ব্র্যাক ২০১৭ সালে জাপানের কুমন ইনস্টিটিউট অব অ্যাডুকেশনের সহযোগিতায় বাংলাদেশে কুমন স্বশিক্ষা পদ্ধতি পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে চালু হয়ে এপর্যন্ত ২৫০০ জন শিক্ষার্থীদের কুমন শিক্ষা পদ্ধতির আওতায় আনতে পেরেছে।  

অনুষ্ঠানে ব্র্যাক কুমনের ৩৩০ জন শিক্ষার্থীদের তিন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হয়। বর্তমানে কুমনের ৫টি সেন্টারের কার্যক্রম চালু আছে।  

আগামী বছরের মধ্যে আরও ১২টি সেন্টার খোলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান ব্র্যাক কুমনের প্রধান নির্বাহী কর্মমর্তা নাহিদ বিন হাসান।

১৯৫৮ সালে জাপানের স্কুলশিক্ষক তরু কুমন তার ছেলে তাকেশি কুমনকে সহজে গণিত শেখানোর জন্য এই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। বর্তমানে কুমন শিক্ষা পদ্ধতি পৃথিবীর ৬০ দেশে সমাদৃত হয় এবং পৃথিবীর ১৪ হাজার ৫০০ স্কুলে কুমন শিক্ষা পদ্ধতি চালু আছে। গণিত ও ইংরেজি কারিকুলামে দক্ষ করে তোলার পাশাপাশি একবিংশ শতাব্দীর গুরুত্বপূর্ণ স্কিল যেমন ক্রিটিকাল থিংকিং, ইমশনাল ইন্টেলিজেন্স ও প্রবলেম সলভিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্কিল নিয়ে কাজ করে জাপানিজ এই সেল্ফ লার্নিং মেথড কুমন। এছাড়াও ইন্ডুভিজুয়াল ইস্টাডিজ প্ল্যানের মাধ্যমে প্রতিটি বাচ্চার পটেনশিয়াল মেক্সিমাইজ করতে কাজ করে কুমন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২২
এসএফ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।