ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীকে মধ্যরাতে মারধর-ভিডিও ছাত্রলীগ নেতার!

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২২
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীকে মধ্যরাতে মারধর-ভিডিও ছাত্রলীগ নেতার!

শাবিপ্রবি (সিলেট): শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শাহপরান হলে মধ্যরাতে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের পর জোরপূর্বক ভিডিও ধারণ ও মোবাইল কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতা সুমন সরকার ও তারেক হালিমির অনুসারীদের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হলের বি-ব্লকের ৪২১ নম্বর রুমে থাকেন রসায়ন ২য় বর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এসএম সাখাওয়াত হোসেন সাকিব নিলয়।

রোববার (১৬ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে মারধর করে ফোন কেড়ে নেন ছাত্রলীগ নেতা সুমন সরকার ও তারেক হালিমী গ্রুপের অনুসারীরা। পরে বিভিন্ন কথা বলিয়ে তারা জোরপূর্বক ভিডিও ধারণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন সাকিব নিলয় জানান, রোববার (১৬ অক্টোবর) রাতে (আনুমানিক ১১টা) লোকপ্রশাসন বিভাগের আমিনুল ইসলাম তামিমের নির্দেশে কয়েকজন আমার রুমে ঢুকে  ৪১৮ নম্বর রুমে নিয়ে যায়। পরে আমাকে বলে, ‘তুই কী শুরু করছোস, তোর সমস্যাটা কী? তুই কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাস? এগুলো বলে আমাকে মারধর শুরু করে। ’

তিনি বলেন, ‘একপর্যায়ে আমার মোবাইল ফোন (iPhone-X) ওরা ছিনিয়ে নেয়। যা এখনো আমি ফেরত পাইনি। ’

এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই শিক্ষার্থী নিরাপত্তা ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক এবং শাহপরান হল প্রভোস্ট বরাবর আবেদন পত্র দিয়েছে।

তিনি জানান, এ সময় সেখানে পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের তানভীর হাসান তামিম, শাকিল হাওলাদার, লোকপ্রশাসন বিভাগের হাবিবুর রহমান আসিফ, সাখাওয়াত হোসাইন রাকিব, শিমুল, সাব্বির হোসেন এবং তারেকসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিল। ওরা সবাই ছাত্রলীগের তারেক হালিমি এবং সুমন সরকারের গ্রুপের অনুসারী।

ভিডিও ধারণ নিয়ে তিনি বলেন, তারা আমাকে জোরপূর্বক শিখিয়ে দেওয়া মিথ্যা এবং বানোয়াট কথা ‘ছাত্রলীগের আরেক গ্রুপের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাই। এই গ্রুপের ক্ষতি করে আবু হাসান রাফি, শামসেদ সিদ্দিকী সুমন ভাইদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাই। ’ এগুলো বলিয়ে নিয়ে ভিডিও ধারণ করে।   এ ঘটনার পর প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বললে তিনি আমাকে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করতে বলেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর মধ্যে আমিনুল ইসলাম তামিম সাংবাদিকদের বলেন, এটা সম্পূর্ণ পরিকল্পনা অনুযায়ী হচ্ছে। সে অভিযোগের বিষয়ে কোনো রকম প্রমাণ দেখাতে পারবে না। সে অন্য কারোর মাধ্যমে ষড়যন্ত্র করছে।

 আর প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান খান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এমন একটি ঘটনা শুনেছি, তা নিয়ে আমরা কাজ করছি।

এছাড়া ছাত্রলীগ নেতা তারেক হালিমিকে ফোন দিলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি ঢাকায় অবস্থান করছি, তবে এটি মিথ্যা, বানোয়াট, ষড়যন্ত্র ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে করা হচ্ছে।

অপরদিকে ছাত্রলীগ নেতাসুমন সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রথমে একজন তার কাছ থেকে দেখার জন্য ফোন নিয়ে একটু পরে দিয়ে দেয়। কিন্তু পরে সে বলে ফোন পায়নি। এটা তার ভিন্ন পরিকল্পনা হতে পারে। আর জোরপূর্বক ভিডিও ধারণের বিষয়ে তিনি বলেন, সে রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। তার বন্ধু এবং সিনিয়ররা তাকে কিছু বিষয়ে জিজ্ঞেস করে।

এ বিষয়ে প্রক্টর ইশরাত ইবনে ইসমাইল বাংলানিউজকে বলেন, এমন কোনো অভিযোগ পাইনি, বিষয়টি জানি না আমি।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।