ঢাকা: গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৮টায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি), যা বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে।
৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের টঙ্গী দারুস সালাম মাদরাসা ভোটকেন্দ্রে সকাল থেকেই ভোটারদের লম্বা লাইন তৈরি হয়। সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে ভোট দিতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানিয়েছেন, কমিশনের কাছে ৪৮০টি কেন্দ্রই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর মধ্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ৩৫১টি কেন্দ্র। আর ১২৯টিকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভোটকেন্দ্রগুলো দুটি ভাগে ভাগ করেছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়। আর ঝুঁকি নেই এমন কেন্দ্রগুলোকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে দেখা হয়।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ৭৩ দশমিক ১৩ শতাংশ বা তিন-চতুর্থাংশ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।
তিনি বলেন, শিল্প এলাকা বিধায় গাজীপুর সিটিতে বিভিন্ন ধরনের মানুষের বসবাস। তাই মানুষের মধ্যে অপরাধ প্রবণতাও বেশি। এ কারণে অতিরিক্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
মো. আলমগীর বলেন, ৫৭টি ওয়ার্ডে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত করা হয়েছে ৭৪ জন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও রয়েছেন ১৯জন। সেখানে র্যাবের ৩০টি টিম ও বিজিবির ২০ প্লাটুন সদস্য রয়েছে।
এ ছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স পুলিশের ১৯টি ও মোবাইল টিম হিসেবে ৫৭টি টিম ভোটের মাঠে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ ও সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জনের ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদের প্রার্থীরা হলেন-মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এমএম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ।
এ ছাড়া স্বতন্ত্র থেকে মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মোট ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন ভোটার গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ ও পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ নারী এবং ১৮ জন হিজড়া।
প্রতিটি ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরার (মোট চার হাজার ৪৩৫টি) মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বিশাল স্ক্রিনে ভোটের পরিস্থিতি দেখছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য নির্বাচন কমিশনার, ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকেরা।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এ নিয়ে বলেছেন, সিসি ক্যামেরায় কোনো অনিয়ম দেখতে পেলে গাইবান্ধা নির্বাচনের চেয়েও কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই নির্বাচনে নিজস্ব ১৫ জন পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া জানিপপ ও সার্ক মানবাধিকার সংস্থা নামের দুটি সংস্থাও ভোট পর্যবেক্ষণ করছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সর্বশেষ ভোট হয়েছে ২০১৮ সালের ২৬ জুন। নির্বাচিত করপোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয় গত ১১ মার্চ। বর্তমানে যারা নির্বাচিত রয়েছেন, তাদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১২ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৩
ইইউডি/আরএ/আরএইচ