ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

কেউ আপত্তি দিলেও আটকে যেতে পারে নতুন দলের নিবন্ধন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৮ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২৩
কেউ আপত্তি দিলেও আটকে যেতে পারে নতুন দলের নিবন্ধন

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, কোনো দল নিবন্ধনের শতভাগ শর্ত পূরণ করলেও আমরা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে আপত্তি আহ্বান করব। এক্ষেত্রে শুনানিতে সেই আপত্তি সঠিক হলেও নিবন্ধন দেওয়া হবে না।

সোমবার (৫ জুন) নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

মো. আলমগীর বলেন, মাঠ কর্মকর্তাদের দলীয় কার্যালয় ও কমিটির বিষয়ে তথ্য পাঠাতে সোমবার পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। হয়তো আসতে আরও দুয়েকদিন সময় লাগবে।

কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও কমিটির বিষয়ে ১২টা দলের তথ্যই আমরা পেয়ে গেছি। কিন্তু জেলার তথ্য পুরোপুরি পাইনি। কোনোটা ৭০ শতাংশ, কোনটার ৫০ শতাংশ, কোনোটার ৪০ শতাংশ আসছে। আর উপজেলার ৪০ শতাংশ পর্যন্ত তথ্য আসছে। আগামী তিন চারদিন পর যথাযথ তথ্যটা আমরা বলতে পারব, কী পেয়েছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রক্রিয়াটা আইনেই বলা আছে। মাঠের তথ্য আর আমাদের কাছে কাগজপত্র যা জমা দিয়েছে দলগুলো, তা এ সংক্রান্ত কমিটি মিলিয়ে দেখবে। তারপর সেই কমিটি প্রতিবেদন কমিশনের কাছে উপস্থাপন করবে।

এরপর প্রাথমিক তালিকা আপত্তির জন্য প্রকাশ করা হবে। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। এতে যে কেউ আপত্তি দিতে পারবে। আপত্তি আসলে শুনানি হবে। না আসলে শুনানি হবে না। এরপর চূড়ান্ত তালিকা করা হবে।

আমাদের কোনো কোটা নাই। তাই বাছাইয়ে উত্তীর্ণ ১২টা দল কোয়ালিফাই করলে ১২টাই নিবন্ধন পাবে। একটা কোয়ালিফাই করলে একটাই পাবে। কোনোটাই কোয়ালিফাই না করলে কোনোটাই নিবন্ধন পাবে না।

কোনো দলের যদি সব ঠিক থাকে, তবে কার্যালয় বা ব্যানার বিলবোর্ড বড় দলগুলো যদি খুলে ফেলে, এমন অভিযোগ করেছে নিবন্ধন প্রত্যাশী দলগুলো, সেক্ষেত্রে কী হবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ওনারা যে কাগজপত্র দিয়েছেন তা মাঠে দেখা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা তদন্ত করেছেন। তখন তো সংশ্লিষ্ট দলের নেতারা বলেছেন, যে ভেঙে ফেলেছেন, এক্ষেত্রে আগে যে ছিল, তার কোনো ফটো দেখাতে হবে। প্রমাণ থাকতে হবে, যে ছিল। প্রমাণের দায়িত্বও তো তার। অফিস করলে তো মিলাদ দেয়, সাংবাদিকদের দাওয়াত দেয়, সেগুলোর প্রমাণ দেখাবে। এটাতো বললেই হবে না। একটা কমিটির দুইশ সমর্থক দেখাতে হবে, তাদের কাছ থেকে তথ্য নেবে মাঠ কর্মকর্তারা যে আসলেই ভেঙে ফেলা হয়েছে কিনা।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এ ইসি সচিব বলেন, শতভাগ শর্ত পূরণ করলে আমরা বিজ্ঞাপন দেবো, যে এই এই দলকে নিবন্ধন দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। কারো কোনো আপত্তি থাকলে নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে জানান। তখন আপত্তি জানালে শুনানি হবে। আমরা আবার যাচাই করবো। অভিযোগ সঠিক না হলে পাবে। আর সঠিক হলে পাবে না। আর শর্ত পূরণ না করলে একটাও হবে না। ১২টা দল শর্ত পূরণ করলে ১২টাই হবে। করতে হবে তো। এখানে ডিসকাউন্ট নেই। শতভাগ শর্তই পূরণ করতে হবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী, সংবিধান বিরোধী, যুদ্ধাপরাধী এবং বাংলাদেশের নাগরিক না হলে হবে না। এমন অনেক শর্ত আছে তো। কাগজে কলমে তারা এসব শর্ত পূরণের কথা বলেছে, এসব ফিল্ডে দেখা হয়েছে। মাঠের তথ্যের যদি অসামঞ্জস্য হলে আর তো পাবে না নিবন্ধন।

তিনি বলেন, আমাদের টার্গেট জুনের মধ্যে নিবন্ধনের কাজ সম্পন্ন করা। কোনো কারণে আপত্তি শুনানিতে দেরি হলে এটা জুলাইতে যেতে পারে।

ইসি সচিব মো. জহাংগীর আলম এ বিষয়ে বলেছেন, নতুন করে নিবন্ধন পেতে ৯৩টি দল আবেদন করেছিল। এই ৯৩টি আবেদনের মধ্যে ১৪টি আবেদন নির্দিষ্ট ফরমেটে ছিল না এবং দু’টি আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে মোট ১৬টি আবেদন বাতিল হয়ে যায়। অবশিষ্ট ৭৭টির মধ্যে তাদেরকে আমাদের চাহিত কাগজপত্র ১৫দিনের মধ্যে জমা দিতে বলেছিলাম। ১৯টি দল ১৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে পারেনি। এছাড়া প্রেরিত চিঠি দু’টি দলের ঠিকানা ঠিক না থাকায় ফেরত এসেছে। ১০টি ১৫দিনের পরে সময়ের আবেদন করেছিল। সেটা না মঞ্জুর করা হয়েছিল। এভাবে ৩১টি আবেদন পরবর্তীতে বাতিল হয়। সবশেষে থাকে ৪৪টি আবেদন। এই ৪৪টি আবেদন যাচাই বাছাই করে দেখা গেছে নীতিমালা আইন এবং চাহিত তথ্যের সঙ্গে তারা যা দিয়েছে তা পূরণ না করায় ১২টি দল টিকেছে, বাকিগুলো বাতিল হয়েছে। অর্থাৎ মোট ৮১টি আবেদন বিভিন্ন কারণে বাতিল হয়েছে।

প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ ১২ টি দলের মধ্যে রয়েছে- এবি পার্টি (আমার বাংলাদেশ পার্টি), বাংলাদেশ জাতিয়াতাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি (বিএইচপি), গণ অধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি(বিএমজেপি), বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি), ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডি)।

বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৪১টি। নতুন কোনো নিবন্ধন পেলে সেই দলটিও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। আইন অনুযায়ী, ইসির নিবন্ধন ছাড়া কোনো দলের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২৩
ইইউডি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।