ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

এমপি দীপংকরের ব্যবসা আয়শূন্য, বেড়েছে সম্পদ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২৩
এমপি দীপংকরের ব্যবসা আয়শূন্য, বেড়েছে সম্পদ

রাঙামাটি: দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ঠিক থাকলে নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

রাঙামাটির ২৯৯ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে হলফনামা দিয়েছেন বর্তমান এমপি (সংসদ সদস্য) দীপংকর তালুকদার।

হলফনামা থেকে জানা গেছে, ২০১৪ সালের দশম এবং ২০১৮ সালের একাদশ নির্বাচনে তিনি নিজেকে সাধারণ ঠিকাদার ও কাঠ ব্যবসায়ী উল্লেখ করেছেন। উভয় ব্যবসা থেকে ২০১৩ সালে ৪৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৭৫ টাকা এবং ২০১৮ সালে ৮৪ লাখ ১৩ হাজার ১৪৫ টাকা বাৎসরিক আয় উল্লেখ করেছিলেন তিনি। কিন্তু এবারের হলফনামায় পেশা সাধারণ ঠিকাদারি উল্লেখ না করে নিজেকে প্রথম শ্রেণির কাঠ ব্যবসায়ী এবং সরবরাহকারী উল্লেখ করেছেন। তবে ব্যবসার আয় তিনি শূন্য দেখিয়েছেন।

তবে বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট এবং দোকানসহ অন্যান্য খাতে ভাড়া বাবদ ৫ লাখ ২৩ হাজার ৪০০ টাকা আয় দেখিয়েছেন। তবে এ খাত থেকে তিনি দশম নির্বাচনে আয় দেখিয়েছিলেন ৪ লাখ ২১ হাজার ৫৭৫ এবং একাদশ নির্বাচনে দেখিয়েছিলেন ৫ লাখ ২ হাজার ৪০০ টাকা। ১০ বছরের ব্যবধানে এ খাতে আয় বেড়েছে ২১ হাজার টাকা।

শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত খাতে দশম জাতীয় নির্বাচনে বাৎসরিক আয় দেখিয়েছিলেন ৬৮ হাজার ৪৩৭ টাকা ও একাদশ নির্বাচনে দেখিয়েছিলেন ৮ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩২ টাকা। তবে এবার এ খাতে আয় দেখিয়েছেন ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। অর্থাৎ এ খাতে এবার আয় কমেছে বেশ।

এবার এমপির সম্মানী ও ব্যাংকের লভ্যাংশ হিসেবে আয় দেখিয়েছেন ১২ লাখ ১৯ হাজার ৮৯৭ টাকা।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিভিন্ন খাত থেকে বাৎসরিক আয় ৫৫ লাখ ৪৩ হাজার ৫৮৭ টাকা এবং একাদশে ৯৮ লাখ ১০ হাজার ২৭৭ টাকা উল্লেখ করলেও বর্তমানে তার বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ১৯ লাখ ৩৩ হাজার ২৯৭ টাকা। এমপি হওয়ার পরও ৫ বছরে তার আয় কমেছে এক পঞ্চমাংশেরও বেশি। তার নামে ফৌজদারি কোনো মামলা নেই। তবে তার আয় কমলেও বেড়েছে সম্পদ।  

এবার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নগদ ১ কোটি ৭৭ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৪ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৩৪ লাখ ৫২ হাজার ৪৩০ টাকা, স্থায়ী আমানতে এফডিআরে ৫৪ লাখ টাকা, সঞ্চয়পত্রে ১ কোটি টাকা, মোটরগাড়ি খাতে ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার ১৪৮ টাকা দেখিয়েছেন তিনি। নিজের নামে ২৫ ভরির স্বর্ণ থাকার কথা হলফনামায় উল্লেখ করলেও তার দাম দেখিয়েছেন আড়াই লাখ টাকা।

তার ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী খাতে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৭০০ টাকা, আসবাবপত্রে ৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকা এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকার একটি পিস্তল ও একটি রাইফেলের কথা উল্লেখ করেছেন।

তার স্ত্রীর নামে নগদ ১২ হাজার ৫০০ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৭৪ লাখ ৪৪ হাজার ১৭৬ টাকা, সঞ্চয়পত্রে ৫০ লাখ টাকা জমা এবং ২৫ ভরি স্বর্ণ থাকার কথা উল্লেখ করলেও জমা থাকা স্বর্ণের দাম দেখিয়েছেন তিন লাখ টাকা।

স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নিজ নামে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলায় রেসিডেন্সিয়াল এলাকায় ৫ কাঠা জমি রয়েছে। জমির মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ৩৩ লাখ টাকা। তার জেলা শহরের চম্পকনগর এলাকায় জায়গাসহ ৫তলা বাড়ি রয়েছে। মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ৮৮ লাখ ৩২ হাজার ২৩৩ টাকা।

জেলার রাজস্থলী উপজেলায় ৩৩১ নং গাইন্দ্যা মৌজায় ২১ দশমিক ৩০ একর এবং রাঙামাটি সদরের ১০৪ নং ঝগড়াবিল মৌজায় ২ দশমিক ২৩ একর জায়গা দানসূত্রে পাওয়ার কথা তিনি হলফনামায় উল্লেখ করলেও সেগুলোর বাজার মূল্য উল্লেখ করেননি তিনি।

স্ত্রীর নামে একটি ফ্ল্যাট ও একটি অ্যাপার্টমেন্ট দেখিয়েছেন তিনি। ফ্ল্যাটের মূল্য ১০ লাখ ৭৫ টাকা এবং অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য ৮০ লাখ ১২ হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।
দায়-দেনার মধ্যে বর্তমানে (শেয়ারের হার অনুপাতে) ৫৩ লাখ ৯৬ হাজার ৫৫০ টাকা ৪০ পয়সা দেনা রয়েছেন তিনি।

দীপংকর তালুকদারের বর্তমানে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৪৮ লাখ ৫৯ হাজার ৫২২ টাকায়। স্ত্রীর আছে ১ কোটি ২৭ লাখ ৫৬ হাজার ৬৭৬ টাকা। ২০১৮ সালের হলফনামায় নিজের নামে ছিল ৪ কোটি ২৩ লাখ ৯৮ হাজার ৭৫২ টাকা। স্ত্রীর নামে ছিল ১ কোটি ২৮ লাখ ২০ হাজার ৫৭৬ টাকা। এর আগের হলফনামায় দীপংকরের নামে ছিল ৩ কোটি ২৯ লাখ ৪২ হাজার ২৭৩ টাকা। স্ত্রীর নামে ছিল ৬০ লাখ ৬৫ হাজার ৩২৫ টাকা। গত ১০ বছরে দীপংকর তালুকদার ও তার স্ত্রী উভয়ের সম্পদ বেড়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২৩
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।