ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

বরিশাল সদরের সব কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ, চিহ্নিত করার দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২৪
বরিশাল সদরের সব কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ, চিহ্নিত করার দাবি

বরিশাল: বরিশাল-৫ (সদর) আসনের সবকয়টি (১৭৬) কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহউদ্দিন রিপন (ট্রাক প্রতীক)। কেন্দ্রগুলোকে চিহ্নিত করে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের দাবিও করেছেন তিনি।

শনিবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, হুমকি-ধমকি ও বার বার বাধার পরও আমার কর্মীরা প্রচার-প্রচারণা থেকে সরে যায়নি। কর্মী ও সমর্থকরা ভালোবাসে বিধায় প্রচারণার শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত আমার সাথে আছে।

সর্বশেষ শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাতে বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের বাটনা গ্রামে আমার বাড়ির পাশে প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে হামলার আগে বাটনা গ্রামে নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেয়। পরবর্তীতে জেলা পরিষদের সদস্য শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে সেই মিছিলে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিনসহ স্থানীয়রাও ছিল। আর ওই মিছিল থেকেই আমার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। তখন সেখানে যে নারী কর্মীরা ছিল, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলার খবরে স্থানীয়রা ছুটে এলে হামলাকারীরা পলিয়ে যায়। দুজন হামলাকারীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ঘটনার সময় আমি বরিশাল নগরে থাকায় বড় ধরণের হামলা থেকে বেঁচে গেছি। আর রাতের ওই ঘটনার পর আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। পাশাপাশি সাধারণ ভোটারদের মাঝে ভীতি সঞ্চার হয়েছে। এ হামলার ঘটনা ছাড়াও সম্প্রতি মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদককে হুমকি দিয়েছেন।

রিপন দাবি করেন, নৌকার প্রার্থী ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভোটকেন্দ্র দখলপূর্বক নির্বাচনে জয়লাভের পরিকল্পনা করছেন। তিনি বরিশাল-৫ (সদর) আসনের সবকয়টি (১৭৬) কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি করে বলেন, কেন্দ্রগুলোকে চিহ্নিত করে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করে ভোটের পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানাচ্ছি।

মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নৌকার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আর ১৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমার আত্মীয়, তার সাথে এ ধরণের ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই।

বরিশালে উৎসমুখর পরিবেশে ভোট হবে, পুরো নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে। আর সব কেন্দ্রকে কেউ ঝুঁকিপূর্ণ বললেই তো হবে না, এটা ঠিক করবে নির্বাচন কমিশন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা।

স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলার বিষয় ভিত্তিহীন দাবি করে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীসহ তার কর্মীরা বৃহস্পতিবার একটি বৈঠকে হুমকি দিয়েছিল কেন্দ্র দখল করার। সেই ধারাবাহিকতায় পিকনিক থেকে ফেরার পথে ট্রাকের লোকজন নৌকার কর্মীদের ওপর হামলা চালায় এবং মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে।

এদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহউদ্দিন রিপনের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে অনুসন্ধান কমিটি।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) নির্বাচনী এলাকা নম্বর-১২৩, বরিশাল-৫ আসনের নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. শিবলী নোমান খান এ নোটিশ দেন।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বরিশাল নগরের বিএম স্কুল মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সালাউদ্দিন রিপনের নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রিপন ভোটের দিন সকাল ৭টার মধ্যে সদর উপজেলার সমস্ত কেন্দ্র দখল করে নেওয়া ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের বরিশাল সিটি করপোরেশনের সমস্ত নির্বাচনী কেন্দ্র দখল করে নেওয়ার হুমকি দেন। যার একটি ভিডিও ফুটেজ নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির দপ্তরে রয়েছে।

প্রকাশ্যে জনসভায় হুমকি দেওয়ায় রিপনের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে। তাই কেন তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না ও নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন পাঠানো হবে না জানতে চেয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে অনুসন্ধান কমিটি। রিপনকে নিজে বা তার দেওয়া ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২৪
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।