ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ক্যালেন্ডারের সিজনে পোস্টারের কর্মযজ্ঞ ছাপাখানায়

ইয়াসির আরাফাত রিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
ক্যালেন্ডারের সিজনে পোস্টারের কর্মযজ্ঞ ছাপাখানায় নির্বাচনী পোস্টার ছাপাতে ব্যস্ত ছাপাখান। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: নতুন বছরের ক্যালেন্ডার, ডায়েরি, পাঠ্যপুস্তক আর অমর একুশের গ্রন্থমেলা উপলক্ষে কাজের চাপে ছাপাখানাগুলো ব্যস্ত বছরের শেষ সময়ে। এ সময়কে বলা হয় ক্যালেন্ডারের সিজন। ঠিক একই সময়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ছাপাখানায় মহাকর্মব্যস্ততা শুরু হয়েছে। দম ফেলাবার সুযোগ নেই ছাপাখানার কর্মীদের।

নিদির্ষ্ট সময়ে পোস্টার সরবরাহ করতে শিফট ভিত্তিক কাজের পাশাপাশি হেলপারকে দিয়ে করানো হচ্ছে মেশিনম্যানের কাজ। প্রতীক বরাদ্দের সঙ্গে সঙ্গে ছাপার কাজ বেড়েছে ১০ গুণ।

২৪ ঘণ্টাই ব্যস্ত থাকছে ছাপাখানাগুলো।

অন্যদিকে গত বছরের মতো এবারও বাড়েনি পোস্টারের দাম। একই দামে ছাপালেও পরিমাণে বেশি হওয়াতে খুশি মালিকরা।

রাজধানীর কাঁটাবন, হাতিরপুল, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, নীলক্ষেত, আজিমপুর, পল্টন, নয়াপল্টন, আরামবাগ, ফকিরাপুলের ছাপাখানাগুলোর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। নির্বাচনী পোস্টার ছাপাতে ব্যস্ত ছাপাখান।  ছবি: বাংলানিউজএর আগে মনোনয়নের দৌড়ে টিকতে ও নিজের প্রচার জানান দিতে পোস্টারের প্রচার চালান প্রার্থীরা। এতে এক দফা পোস্টার তৈরির কার্যক্রম চলে ছাপাখানায়। প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার পরপরই দ্বিতীয় দফার কাজে ব্যস্ততা বাড়ে। কোনো ছাপাখানায় ৩ থেকে ৮ লাখ পর্যন্ত পোস্টার, স্লিপ, লিফলেট ছাপার কাজ চলছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে আগেই ছাপাখানা মালিকরা কাগজ, কালিসহ বিভিন্ন উপকরণ সংগ্রহ করে রেখেছেন। এখন ক্যালেন্ডার, ডায়েরির পরিবর্তে পোস্টারকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

নীলক্ষেতের এক প্রেসের মেশিনম্যান ইমরান বলেন, এখন ২৪ ঘণ্টা কাজ করা লাগছে। হেলফারও এখন মেশিনম্যানের কাজ করছে। নিজেরাই শিফট করে কাজ করছি।

এদিকে গত বছরের মতো একই দামে পোস্টার ছাপার কাজ চলছে। তবে পরিমাণে বেশি ছাপা হওয়াতে খুশি মালিকরা। এবার বড় সাইজের ১৮/২৩ ইঞ্চি প্রতিটি পোস্টার ছাপাতে খরচ পড়ছে ৫ টাকা, ছোট ৯ ইঞ্চি/পৌনে ৬ ইঞ্চি সাইজের পোস্টার ১ টাকা ৭৫ পয়সা এবং স্লিপ সাইজের প্রতিটি লিফলেটে খরচ পড়ছে ৬৫ পয়সা। যা গত বছরেও একই দাম ছিলো। নির্বাচনী পোস্টার।  ছবি: বাংলানিউজএএন প্রিন্টার্সের পরিচালক শাহাদত আবরার বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর ঈদ ও বৈশাখ ঘিরে তেমন ভালো কাজের অর্ডার আসেনি। তবে এবার জাতীয় নির্বাচন ও নতুন বছর একসঙ্গে হওয়ায় ব্যবসায়ীরা বেশ আশাবাদী।

তিনি বলেন, আমরা মূলত বছরের পুরোটা সময় ডায়েরি, ক্যালেন্ডার ও বই ছাপার কাজ করি। এ সময়টাকে ক্যালেন্ডারের সিজন বলা হয়। নির্বাচন বা কোনো দিবসে পোস্টার তৈরির কাজ বেশি হয়।

নির্বাচন ঘিরে এখন পর্যন্ত ৫ লাখ অর্ডার পেয়েছি। ঢাকার বাইরে থেকেও কাজ এসেছে। তবে একসঙ্গে দুই উৎসব পড়ার কারণে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে।

স্বত্ত্বাধিকারী মো. ফারুক বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে এক প্রকার রাজনৈতিক সংকট দেখা দেয়। রাজনীতির নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের প্রিন্টিং ব্যবসায়। এ বছর জাতীয় নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করায় মনে হচ্ছে ছাপাখানা আবার সচল হবে। ইতিমধ্যে কাজের অর্ডার আসতে শুরু করেছে, আমাদের ব্যস্ততাও বেড়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
ইএআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।