ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

লক্ষ্মীপুরের ৫ উপজেলায় আ’লীগ প্রার্থীর ছড়াছড়ি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৯
লক্ষ্মীপুরের ৫ উপজেলায় আ’লীগ প্রার্থীর ছড়াছড়ি

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগাম প্রচারণা শুরু হয়েছে। জেলার পাঁচ উপজেলায় ব্যানার-পোস্টার ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা প্রচারণা চালাচ্ছেন। করছেন দৌড়ঝাঁপ।

জেলার রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি, কমলনগর ও সদর উপজেলার সর্বত্র এখন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে নানা আলোচনা। তফসিল ঘোষণা না হলেও আওয়ামী লীগ নেতারা প্রচার-প্রচারণা ছাড়াও দলীয় মনোনয়নের জন্য তৎপর।

 

অপরদিকে বিএনপির নির্বাচন না করার সিদ্ধান্তে তাদের কোনো তৎপরতা নেই। নেতাকর্মীরা একেবারেই নিরব রয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগের শরিকদেরও মাঠে দেখা যাচ্ছে না।

বিএনপি ভোটে অংশগ্রহণ করবে না এমন আশঙ্কা থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। নৌকা মনোনয়ন পেতে তারা জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে লবিং করছেন। দলীয় মনোনয়ন পেলেই জেতা যাবে; এমন ধারণা থেকে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীর ছড়াছড়ি। বেশি প্রার্থী থাকায় বাছাইতে আওয়ামী লীগ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার কারণে গ্রুপিং-কোন্দল কিংবা সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে।

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এরইমধ্যে একক প্রার্থী নির্ধারণে তৃণমূলে চিঠি পাঠিয়েছে দলটি। প্রতি উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদের বিপরীতে তিনজন করে প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠাতে জেলা কমিটিগুলোকে বলা হয়েছে।

এরই আলোকে ২৯ জানুয়ারির থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনদিন প্রার্থী বাছাই করতে লক্ষ্মীপুরের পাঁচটি উপজেলায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নিয়ে বর্ধিত সভা করবে আওয়ামী লীগ। ২৯ জানুয়ারি রামগঞ্জ, রায়পুর, ৩০ জানুয়ারি রামগতি, কমলনগর ও ৩১ জানুয়ারি সদর উপজেলার সভা অনুষ্ঠিত হবে।

লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলাতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতোমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। জেলার পাঁচটি উপজেলায় চেয়ারম্যান এবং নারী ও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে শতাধিক প্রার্থী মাঠে নেমেছেন। তারা শুরু করেছেন গণসংযোগ। দিচ্ছেন ভোটারদের প্রতিশ্রুতি। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সরব হয়ে ওঠেছেন সম্ভাব্য প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরা। এদের মধ্যে বেশির ভাগ প্রার্থীই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী।

কমলনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের এক ডজনের প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চর লরেন্স ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এ কে এম নুরুল আমিন মাস্টার, সহ-সভাপতি হাজিরহাট ইউপির চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক পাটারিরহাট ইউপির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রাজু, কমলনগর উপজেলা ১৪ দলীয় জোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল হক, সহ-সভাপতি রেবেকা মহসিন। আওয়ামী লীগ নেতা পাটারিরহাট ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রাশেদ বিল্লাহ আলমগীর, সাহেবেরহাট ইউপির চেয়ারম্যান আবুল খায়ের, চর ফলকন ইউপির চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ, তোরাবগঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যান ফয়সল আহমেদ রতন, চর কাদিরা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন রাজন রাজু, জেলা পরিষদের সদস্য মোশারফ হোসেন বাঘা ও কমলনগর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পি।  

এছাড়া বিকল্প ধারার প্রার্থী মোহাম্মদ মমিনউল্লাহ ইরাকী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা আ হ ম নোমান সিরাজীর নাম শোনা যাচ্ছে।

রামগতি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীরা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ, রামগতি পৌরসভার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা আজাদ উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেল ও উপজেলা যুব লীগের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন হেলাল (ভিপি হেলাল)।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী জেলা যুব লীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু। এখন পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে সদরে অন্য কোনো প্রার্থীর প্রকাশ্যে তৎপরতা ও ব্যানার-পোস্টার চোখে পড়েনি। তবে ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীরা জানান দিচ্ছেন তাদের অবস্থান।

রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আ ক ম রুহুল আমিন, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেন চৌধুরী, ভাদুর ইউপির চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন ভূঁইয়া, নোয়াগাঁও ইউপির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন রানা ও করপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান মজিবুল হক মজিব।

রায়পুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীরা হলেন- বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আলতাফ হোসেন হাওলাদার, সাবেক পৌর মেয়র রফিকুল হায়দার বাবুল পাঠান, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশিদ, জেলা যুব লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক বায়জিদ ভূঁইয়া ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মঞ্জুর হোসন সুমন।

জেলা আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, অভিজ্ঞতা ও সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয়, দলের প্রতি নিবেদিত ও ত্যাগী- এমন নেতাই মনোনয়নে যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন। সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি অধিক গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় আনা হবে। এছাড়া থাকতে হবে সততা, নিষ্ঠা, দলের জন্য নিবেদিত ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তি। বিতর্কিতরা অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৯
এসআর/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।