ইসি সূত্রগুলো জানিয়েছে, সাধারণত কারিগরি শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড কিংবা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এই ঝামেলা বেশি পোহাতে তাই। এজন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে- কেউ যদি শিক্ষা সনদে নাম পরিবর্তন করতে চায়, তাহলে তার পরিচয় যেন ইসির তথ্য ভাণ্ডার থেকে যাচাই করে নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে এনআইডিতে যেভাবে নাম রয়েছে, সেভাবেই সনদ সংশোধন করতে হবে। এতে কেউ চাইলেই বোর্ড পরীক্ষা পাসের কয়েক বছর পর ইচ্ছেমতো নাম সংশোধন করতে পারবে না। এছাড়া অনেকেই পুরো নামই পরিবর্তন করে ফেলে। আর এতে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম-অপরাধের ঘটনাও ঘটে।
অন্যদিকে, কারিগরি শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড কিংবা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত পিছিয়ে পড়ারা ভর্তি হন। এক্ষেত্রে অনেকেই বেশি বয়সে এসব শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আসেন। তারা হয়তো কোনো চিন্তা ভাবনা না করেই, নামের বানান কিংবা বয়স উল্লেখ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায়, সেটা এনআইডির সঙ্গে মিল নেই। এ অবস্থায় চাকরিতে ঢুকতে গেলে তাদের এনআইডি সংশোধন করার প্রয়োজন পড়ে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যেন এনআইডি অনুযায়ী ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। আর শিক্ষার্থীর এনআইডি যেন ইসির তথ্য ভাণ্ডার থেকে যাচাই করে নেওয়া হয়।
একজন ব্যক্তির সব কাগজপত্রে একইরকম নাম ও একই জন্ম তারিখ লিপিবন্ধকরণের জন্য নির্বাচন কমিশন নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। যার ধারাবাহিকতায় শিক্ষা কার্যক্রমে এ পদক্ষেপ ইসির। ইতোমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে এনআইডিতে উল্লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে চাকরিতে নিয়োগের সুপারিশও করেছে নির্বাচন কমিশন।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, নাম সংশোধন করে অন্য পরিচয়ে অনেকেই অন্যের সম্পত্তি দখল করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ভুয়া এনআইডি বানিয়েও একই কাজ করা হচ্ছে। আবার জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে বা বয়স কমিয়ে চাকরিতে ঢোকার একটা প্রবণতাও দেখা গেছে। আর এসব কারণে এনআইডি সংশোধনের প্রবণতাও বেড়ে গেছে। এতে ইসির কর্মঘণ্টার অপচয়ের সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতিও বাড়ছে। এসব থেকে রেহাই পেতেই ‘এক ব্যক্তির একইরকম তথ্য’ সব জায়গায় লিপিবদ্ধ যেন থাকে, সে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন) আবদুল বাতেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ড ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা যেমন সংশোধনের জন্য শিক্ষাবোর্ডের তথ্য নিচ্ছি, তেমনি তাদের ভর্তি কার্যক্রমও এনআইডি অনুযায়ী করার জন্য বলেছি। এতে এনআইডিতে নাম পরিবর্তন, এনআইডি জালিয়াতি কিংবা এ সংক্রান্ত অনিয়ম কমে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯
ইইউডি/টিএ