ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

বিদেশি সিনেমা আমদানি বন্ধ করতে হবে: ডিপজল

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৩
বিদেশি সিনেমা আমদানি বন্ধ করতে হবে: ডিপজল ডিপজল

বাংলাদেশে বিদেশি বিশেষ করে ভারতীয় সিনেমা চালানো নিয়ে অনেকদিন ধরেই কেউ কেউ চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। হল মালিকদের অনেকে হিন্দি সিনেমা আমদানি ও প্রদর্শনে বেশি আগ্রহী।

তাদের যুক্তি হচ্ছে, সিনেমা হল বাঁচাতে হলে হিন্দি ও অন্য সিনেমা আমদানি করা জরুরি। তা নাহলে, হল বাঁচানো যাবে না।

অন্যদিকে, চলচ্চিত্রের শিল্পী, কলাকুশলী, নির্মাতা ও প্রযোজকদের অনেকে এর তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন। তারা বলছেন, এতে আমাদের চলচ্চিত্র পিছিয়ে যাবে, ধ্বংস হয়ে যাবে। শিল্পী, প্রযোজক ও নির্মাতারা পথে বসে যাবেন। এছাড়া আমাদের শিল্প ও সংস্কৃতির ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হবে।

সরকারও বিদেশী সিনেমা আমদানির ক্ষেত্রে নীতিমালা করে দিয়েছে। বিদেশি সিনেমা আমদানি নিয়ে ইতোমধ্যেই কলকাতার কিছু সিনেমা আমদানি করে মুক্তিও দেওয়া হয়। তবে সেসব সিনেমা মোটেই চলেনি। তারপরও কেউ কেউ ভারতীয় সিনেমা আমদানির কথা বলছেন।

গেল সপ্তাহে হিন্দি সিনেমা আমদানি ও মুক্তি নিয়ে আবারো সিনেমাপাড়া সরব হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষে বিভিন্ন বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। তবে চলচ্চিত্রের মুভিলর্ডখ্যাত ডিপজল বরাবরই ভারতীয় বিশেষ করে হিন্দি সিনেমা আমদানির বিপক্ষে।

তিনি বলেন, আমাদের চলচ্চিত্রকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য একটি চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। আমরা দেখেছি, হিন্দি সিনেমা মুক্তি দেওয়ার ফলে নেপালের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি কিভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশটির সমৃদ্ধ সিনেমা হিন্দি সিনেমার কবলে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের দেশে যদি একের পর এক হিন্দি সিনেমা চালানো হয়, তাহলে আমাদের চলচ্চিত্রও ধ্বংস হয়ে যাবে। নেপালের ফিল্মের মতো হবে। আমাদের নিজস্ব ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বলতে কিছু থাকবে না। আমাদের শিল্প ও সংস্কৃতিতে তা আঘাত করবে।

তিনি বলেন, যদিও হিন্দি সিনেমা চালিয়ে দর্শকদের সাড়া পাওয়া যায়নি। তারপরও হিন্দি সিনেমা আমদানির পায়তারা আমাদের ফিল্মের ধ্বংস ডেকে আনবে। একটা চক্র আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।

দর্শক আমাদের দেশের শিল্প ও সংস্কৃতির সিনেমাই দেখতে চায়- উল্লেখ করে ডিপজল বলেন, ইতোমধ্যে ‘হাওয়া’, ‘পরাণ’সহ আরো বেশ কিছু সিনেমা দিয়ে আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। সিনেমাগুলো কোটি কোটি টাকা ব্যবসা করেছে। যে সিনেমা হলের সংখ্যা ৪০-৫০ এ নেমে এসেছিল, এখন তা বেড়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ হয়েছে। অনেকে এখন সিনেমা নির্মাণ করছেন। আমার পাঁচটি সিনেমা মুক্তির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী রোজার ঈদে একটি, কোরবানির ঈদে একটি, দুই ঈদের মাঝে একটি এবং কোরবানির ঈদের পর বাকি দুটি সিনেমা মুক্তি দেব। আরো ছয়-সাতটি সিনেমার কাজ চলছে। অন্যদের সিনেমারও কাজ চলছে। এসব সিনেমা মুক্তি পেলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়াবে।

যোগ করে এই অভিনেতা বলেন, এ অবস্থায় হিন্দি সিনেমা আমদানি ও মুক্তি দিলে আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থমকে যাবে। আমাদের সিনেমাগুলোর কি হবে? যদি হিন্দি সিনেমা আমদানি ও মুক্তি দেওয়া হয়, তাহলে চলচ্চিত্রকে ঘুরে দাঁড় করানোর জন্য আমরা যারা একের পর এক সিনেমা নির্মাণ করছি, তারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো। পুরো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংসের মুখে পড়বে। কাজেই, আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এবং আমাদের দেশের সিনেমা বাঁচাতে বিদেশি সিনেমা আমদানি বন্ধ করতে হবে।

ডিপজল বলেন, আমি নিজেও হল চালিয়েছি, আমি জানি, দর্শক কি ধরনের সিনেমা দেখতে চায়। তারা আমাদের দেশের গল্প ও শিল্পীদের অভিনয়ের সিনেমা দেখতে চায়।

হিন্দি সিনেমা চালাতে হলে শিল্পী সমিতিকে দশ পার্সেন্ট দিতে হবে বলে সাধারণ সম্পাদক নিপুণ যে কথা বলেছেন, তা নিয়ে ডিপজল বলেন, এটা কোনো যুক্তির কথা নয়। যেখানে আমরা চাচ্ছি না, বিদেশি সিনেমা আমদানি করা যাবে না, সেখানে এ ধরনের কথা সমর্থনযোগ্য নয়। তাছাড়া, এটা শিল্পী সমিতির বিষয় নয়। আমরা শিল্পীরা সবসময়ই চলচ্চিত্রের স্বার্থে বিদেশি সিনেমা আমদানির বিরোধিতা করে আসছি। আমাদের অবস্থান পরিস্কার। এটা নিয়ে অন্যকোনো অবস্থান আমাদের নেই। এ ধরনের বক্তব্য কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাছাড়া সমিতির মিটিংয়ে এমন কোনো কথা হয়েছে কিনা, তা আমার জানা নাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৩
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।