স্টকহোম থেকে: তামান্না আবার পর্দায় ফিরছেন। দেশীয় চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় এই চিত্রনায়িকা এমন আভাসই দিলেন।
সুইডেনের স্টকহোমে বেড়ে ওঠা তামান্না বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সম্ভাবনা জাগিয়েও নানা কারণে সুইডেনে চলে আসেন। নয় বছর পর আবার দেশে ফিরে অভিনয় শুরু করেছিলেন। তবে প্রবাসী মা-বাবার অনুরোধে আবার ফেরেন প্রবাসজীবনে। পেশায় ডেন্টিস্ট তামান্না স্টকহোমে ডাক্তারি করতেন। এখন পেশাবদল করে পারফর্মিং আর্টসের শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। পাশাপাশি সুইডেনে ভারতীয় দূতাবাসসহ নানা অনুষ্ঠানে বলিউড ঘরানায় তার নৃত্য পরিবেশনা প্রশংসিত হয়েছে।
স্টকহোমের ম্যালারহয়দেন এলাকায় তার বাড়ি। গত ১৭ আগস্ট সন্ধ্যায় সেন্ট্রাল স্টেশন-টি সেন্ট্রাল থেকে পাতালরেলে ফ্রুয়াংগেনমুখো ট্রেনে ভাস্তারতুর্প স্টেশন থেকে পাঁচ মিনিট হাঁটার পরই পাওয়া গেলো তামান্নার বাড়ি। স্বাগত জানিয়ে তিনি বললেন, ‘সুইডেনে থাকলেও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টিভি পর্দার হালনাগাদ খোঁজখবর রাখি। এখানে এখন শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও আবার ওই জগতে ব্যস্ত হওয়ার ইচ্ছা আছে। ইতোমধ্যে কিছু কাজের প্রস্তাব এসেছে, এখন সেগুলো ভেবে দেখছি। ’
ব্যক্তিজীবনে সরল, সংসারী ও ঘরমুখো তামান্না বললেন, ‘দেশের চলচ্চিত্র জগতটা আবার ইতিবাচক দিকে মোড় নিয়েছে। চলচ্চিত্র নিয়ে সুশীল সমাজের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে নতুন করে। তাছাড়া দেশে টিভি অঙ্গনের অবস্থা এখন রমরমা। তাই নিজেকে গুটিয়ে রাখার যে অবস্থা আগে ছিলো এখন আর তা নেই। তবে সবকিছুর আগে নিজের জীবন। মানুষের জীবনের ধর্মটাই এমন- কোনো কোনো সময় নিজের জীবনের পথচলাই সবচেয়ে বড় হয়ে দাঁড়ায়। ’
১৯৯৮ সালে শহিদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘ভন্ড’ ছবিতে অভিনয় করে বাজিমাত করেন তামান্না। প্রথম ছবিতেই তারকাখ্যাতি পান তিনি। কমনীয় লাবণ্য, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নিরহঙ্কার অমায়িক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তামান্নাকে পৌঁছে দেয় জনপ্রিয়তার শীর্ষে। ‘ভন্ড’ ছবির সাফল্যের পর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একে একে অভিনয় করেন ১৭টি চলচ্চিত্রে। এর মধ্যে রয়েছে ‘হৃদয়ে লেখা নাম’, ‘তুমি আমার ভালবাসা’, ‘সন্ত্রাসী বন্ধু’, ‘আমার প্রতিজ্ঞা’, ‘মুখোশধারী’ ইত্যাদি।
দুই বছর আগে মঈন বিশ্বাস পরিচালিত ‘পাগল তোর জন্যরে’ ছবিতে অভিনয় করে তামান্না নতুন করে তার অভিনয়দক্ষতার প্রমাণ রাখেন। ‘বলতে পারেন ৯ বছর আবার নতুনভাবে অভিনয় করা। মনে করেছিলাম, দর্শক আমাকে ভুলে গেছে! কিন্তু ঢাকায় বিমানবন্দরে নামার পর মানুষের আগ্রহ-ভালোবাসা পেয়ে মুগ্ধ হয়েছি। বুঝতে পারি, ভক্ত-অনুরাগীদের ভালোবাসাই একজন অভিনয়শিল্পীকে বাঁচিয়ে রাখে। ’
কুমিল্লায় জন্ম হলেও চার বছর বয়স থেকে সুইডেনের স্টকহোমে আছেন তামান্না। নব্বই দশকের মাঝামাঝি ঢাকায় গেলে অভিনেতা-পরিচালক আফজাল হোসেনের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্টারশিপ গুড়ো দুধের মডেল হন। তা প্রচারের আগেই আবার সুইডেনে চলে আসতে হয়। বিজ্ঞাপনটি প্রচারের পর শুরু হয় এই নতুন মুখের খোঁজাখুঁজি। ঢাকার নির্মাতারা সু্ইডেন থেকে খুঁজে বের করেন তামান্নাকে। তিনি বলেন, ‘মডেলিংয়ের মাধ্যমে অভিষেক হলেও আমার লক্ষ্য ছিলো চলচ্চিত্রে অভিনয়। পরে ‘ভন্ড’ ব্যবসাসফল হওয়ার পর সেক্ষেত্রে সফল হতে আমাকে বেগ পেতে হয়নি। ’
বাংলাদেশ সময় : ১৩০২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৫
জেএইচ