নাচ, গান, ছবি, আবৃত্তি যেমন বিনোদন দেয়, তেমনি খেলাধুলাও মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় বিনোদন। বিশেষ করে ক্রিকেট।
খেলা মাঠে গড়ানোর দুই দিন আগে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নাচ, গান, জমকালো আতশবাজি আর লেজার শোর বর্ণিল আলোকছটায় বিসিবির আয়োজনে বিপিএলের নতুন আসরের উদ্বোধন হয়ে গেলো। এখানে ছিলো দেশ-বিদেশের শিল্পীদের মনমাতানো পরিবেশনা। এসব উপভোগ করতে গিয়ে দর্শক-শ্রোতারা মেতেছিলেন উল্লাসে।
শুরুর পরিবেশনায় ছিলো সাদিয়া ইসলাম মৌ ও বাফার নৃত্যশিল্পীদের ছন্দময় বিচরণ। এরপর ভক্তদের উল্লাসে মাতান আইয়ুব বাচ্চু ও তার ব্যান্ড এলআরবির সদস্যরা। তারা পরিবেশন করেন ‘রাখে আল্লাহ মারে কে’, ‘সেই তুমি কেনো এতো অচেনা হলে’, ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো’, ‘মন চাইলে মন পাবে’ প্রভৃতি। এরপর গানে গানে শ্রোতার মন ভরিয়ে দেয় চিরকুট ব্যান্ড। তারা শুরুতেই পরিবেশন করেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের দেশাত্মবোধক গান ‘ধনধান্য পুষ্প ভরা’। এরপর ব্যান্ডটি একে একে গেয়েছে ‘যাদুর শহর’, ‘মরে যাবো’, ‘কানামাছি’ গানগুলো।
দেশের দুই ব্যান্ডের পর মঞ্চে ওঠেন মমতাজ। তিনি শুরুতে গেয়ে শোনান ‘বিশ্বজয়ের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলো’। তারপর একে একে পরিবেশন করেন ‘আগে যদি জানতাম রে বন্ধু’, ‘গান গাইছিলো বাবা সেইদিন’, ‘খায়রুন লো’, ‘পাংখা’, ‘নান্টু ঘটকের কথা শুইনা’, ‘মরার কোকিলে’ গানগুলো।
দেশের শিল্পীদের গান শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের উপস্থিতিতে ছিলো উদ্বোধন ঘোষণার আনুষ্ঠানিকতা। এবারের টুর্নামেন্টের দলগুলোর একজন করে খেলোয়াড়ের মঞ্চ-উপস্থিতি। তারপর আবার ছড়ায় সুরের মূর্ছনা। এবার মঞ্চে আসেন কেকে। তিনি এর আগেও ঢাকায় এসেছিলেন। পুরো নাম কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। তিনি শুরু করেন ‘ও লামহে’ ছবির ‘কেয়া মুঝে পেয়ার হ্যায়’ গেয়ে। গানের ফাঁকে বাংলায় কথা বলে দর্শকদের বাহবা কুড়িয়েছেন নয়াদিল্লির এই ৪৫ বছর বয়সী সংগীতশিল্পী। প্রথম গানের পর তিনি পরিবেশন করেন ‘বাচনা এ হাসিনো’ ছবির ‘খুদা জানে’। এরপর একে একে গেয়ে শোনান ‘গ্যাংস্টার’-এর ‘তু হি মেরা শাম হ্যায়’, ‘হাম রাহে ইয়া না রাহে’, ‘জান্নাত’ ছবির ‘জারা সি দিল মে দে জাগা তু’।
‘বাংলাদেশের মানুষ খুব ভালো’- কথাটি বলে কেকে গেয়েছেন ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ ছবির হৃদয়ছোঁয়া গান ‘তু জো মিলা’। এরপর পরিবেশন করেন ‘ডন’ ছবির শিরোনাম-গান, ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ ছবির ‘তাড়াফ তাড়াফ দিল’, ‘নিউইয়র্ক’ ছবির ‘হ্যায় জুনুন’, বাংলা কথাসহ ‘গুন্ডে’র ‘তুনে মারি এন্ট্রিয়া’, ‘দেশি বয়েজ’ ছবির শিরোনাম-গান।
কেকের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনার পর মঞ্চ মাতান বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ। সবশেষ আকর্ষণ ছিলেন বলিউড সুপারস্টার হৃতিক রোশন। তারপর লেজার শোর মাধ্যমে ফুটে ওঠে বিপিএলের লোগো, দলগুলোর নাম। সঙ্গে পোড়ানো হয় আতশবাজি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি তিনজন মিলে উপস্থাপনা করেন। মঞ্চে ছিলেন নুসরাত ফারিয়া। স্টুডিওতে ও সাজঘরে আলাপচারিতা করেন আমব্রিন ও কলকাতার অভিনেত্রী পামেলা সিং ভুটোরিয়া।
বিপিএলের তৃতীয় আসরের উদ্বোধনী আয়োজন উপভোগ করেন হাজার হাজার শ্রোতা। বিকেল থেকেই তারা জড়ো হতে থাকেন মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। রাতে এলআরবি ও কেকের পরিবেশনার সময় দর্শক-শ্রোতারা মোবাইল ফোন জ্বালিয়ে অন্যরকম আবহ সৃষ্টি করেন। আলো থাকে বলেই আঁধারের গুরুত্ব যেমন বোঝা যায়, তেমনি বলা যায়- বিপিএল হচ্ছে বলেই না এমন ধুমধাড়াক্কা আয়োজন উপভোগ করা গেলো!
বাংলাদেশ সময় : ০২৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৫
জেএইচ