ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

হারিয়ে যাওয়া সই

তৃণা শর্মা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০১৬
হারিয়ে যাওয়া সই

সবার জীবনে বন্ধুর গুরুত্ব অনেক। সত্যিকারের নিঃস্বার্থ বন্ধু মানুষকে সমৃদ্ধ করে, এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগায়।

বন্ধুদের ঘিরে থাকে নানান মধুর স্মৃতি। এর মধ্যে বাল্যবন্ধুদের সঙ্গে কথা মনে পড়ে আলাদাভাবে।
 
বহু বছর ছোটবেলার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয় না অনেকের। তারকারাও আছেন সেই দলে। যোগাযাগ না থাকলেও তাদে মনে ঠিকই আছেন তারা। বন্ধু দিবসকে সামনে রেখে দেশীয় চলচ্চিত্রে একসময় ঝড় তুলেছিলেন এমন তিন অভিনেত্রী বাংলানিউজের সঙ্গে ভাগাভাগি করেছেন তাদের হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের গল্প।

দলবেঁধে দুষ্টুমি করতাম!


জীবনকে নিয়ে ভাবলে মনে হয় যদি আবার ছোটবেলার সময় ফিরে পেতাম! কতো মধুরই না ছিলো সেই সময়গুলো। বান্ধবীরা মিলে একসঙ্গে পুতুলখেলা, ঘুরে বেড়ানোর মধ্যে আনন্দ ছিলো অনেক। সময়ের বিবর্তনে সবই স্মৃতি হয়ে গেছে। শৈশবে আমার বান্ধবীরা সব কাজ দলবেঁধে করতাম।
 
এখনও মনে আছে, শিউলি ফুলের মৌসুম এলে আমরা সবাই খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে সেগুলো কুড়াতাম। মাঝে মধ্যে গাছ থেকেও ফুল ছিঁড়ে নিয়েছি। কাউকে দেখলে সবাই মিলে দৌড়ে পালাতাম। তখন আশেপাশের ছোট গাছগুলো ভেঙে যেতো আর ফ্রকে গুজে রাখা ফুলগুলোও ফেলে চলে আসতাম। কিছুক্ষণ পর আবার সেখানে ফুল কুড়াতে যেতাম।
 
দলবেঁধে আমরা আরেকটি কাজ করতাম। সেই সময় মানুষ খুব আচার বানাতো। আচার বানানো হলে সেগুলো রোদে রাখা হতো। আমরা বান্ধবীরা মিলে এই সুযোগে আচার চুরি করে খেয়ে চলে আসতাম। কোনো আচার খুব বেশি ভালো লাগলে বয়ামসহ নিয়ে পালাতাম!
 
খুব মিস করি ওই দিনগুলো, সেই মানুষগুলো। আবার যদি তাদেরকে পেতাম। আমি হয়তো তাদেরকে চিনবো না। কিন্তু ওরা তো আমাকে চেনে। আমার কাছে ওরা এসে যদি বলতো, ‘আমিই তোর হারিয়ে যাওয়া সই!’ কী যে আনন্দ হতো বলে বোঝাতে পারবো না।
 
স্কুল ফাঁকি দিয়ে সিনেমা দেখেছি


আমার কাছে মনে হয়, কিছু কথা থাকে যা বন্ধু ছাড়া বলা যায় না। এমন কিছু কাজ থাকে যা বন্ধু ছাড়া করা সম্ভব হয় না। ছোটবেলায় আমার এক বান্ধবী ছিলো, ওর নাম লোটাস। আমরা একসঙ্গে স্কুলে পড়তাম। এখন তো বন্ধু দিবস তারিখ মেনে উদযাপন করে সবাই। আমাদের সময় কিন্তু এসব কিছু ছিলো না। আমরা তখন সময় পেলেই পিকনিক করতাম।
 
আমাদের সারাদিন সিনেমা নিয়ে গল্প করতাম। এমন অনেকদিন হয়েছে স্কুল ফাঁকি দিয়ে সবাই মিলে সিনেমা দেখতে গিয়েছি। তবে কাঙ্ক্ষিত ছবি সম্পর্কে আগে দু’জনে মিলে ভাবতাম কবে যাবো, কীভাবে যাবো ইত্যাদি। আবার ছবি দেখে এসে কী কী দেখলাম সেসব নিয়ে আলোচনা করতাম।
 
মাঝে মধ্যে চোখ বন্ধ করলেই সেসব স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ফিরে যেতে ইচ্ছে করে সেই সময়ে। তবে শুধু বন্ধু থাকলেই হবে না বন্ধু দিবস পালন করলেই হবে না, বন্ধুদের মধ্যে মনের টানও থাকা দরকার।
 
একসঙ্গে পুতুল খেলতাম


আমাদের জীবনে অনেক বন্ধু থাকে। কেউ খুব ছোটবেলার, আবার কেউ কর্মক্ষেত্রে আমাদের বন্ধু। সময়ের স্রোতে বাল্যবন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকে না অনেকের। আমারও নেই। তাদের সঙ্গে আর কখনও দুষ্টুমি কিংবা গল্প করার সুযোগ হয় না। অথচ একটা সময় ছিলো, তাদের সঙ্গে একবেলা দেখা বা কথা না হলে মনমরা হয়ে যেতাম।
 
আমার তেমনই এক বান্ধবী ছিলো বেবী। আমরা তখন মতিঝিলের একটি কলোনিতে থাকতাম। একসঙ্গে পুতুল খেলতাম। সারা কলোনি ঘুরে বেড়াতাম। দু’জনে মিলে অনেক দুষ্টুমি করতাম। সেসময় কলোনির একটি ছেলে আমাকে প্রেমপত্র দিয়েছিলো। সেটা নিয়েও খুব মজা করেছি আমরা। যখন ইচ্ছা হতো তখনই বাসা থেকে চাল-ডাল নিয়ে রান্না করে খেতাম দুই বান্ধবী।
 
খুব মনে পড়ে বেবীর কথা। জানি সেইসব দিন আর ফিরে আসবে না। কিন্তু মনের কথা বলার জন্য কোনো সময়ের দরকার হয় না। প্রয়োজন মনের মতো মানুষ ও বন্ধু।
 
বাংলাদেশ সময়: ০১১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৬
টিএস/জেএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।