ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

মা-বাবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অভিনেতা হয়েছেন আমির খান

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৬
মা-বাবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অভিনেতা হয়েছেন আমির খান আমির খান

‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিতে তরুণ কৌতূহলী প্রকৌশলী চরিত্রে ভক্তদের বিনোদিত করেছেন আমির খান। এটা সম্ভব হতো না যদি মা-বাবার কথা শুনতেন তিনি।

তারা চেয়েছিলেন ছেলে প্রকৌশলে ক্যারিয়ার গড়ুক।

আমিরের বাবা হলেন পরিচালক তাহির হুসেইন। আর চাচা চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসির হুসেইন। চলচ্চিত্র পরিবার হওয়া সত্ত্বেও বলিউডের চিত্র দ্রুত বদলায় বলে তারা চাননি এ অঙ্গনে আমির আসুক।

আমির বলেন, “তখন প্রায় সবারই মনে হয়েছিলো, চলচ্চিত্র শিল্প আমার ক্যারিয়ার গড়ার জন্য উপযুক্ত স্থান নয়। আমার পরিবার বিশেষ করে চাচা আমাকে বলেছেন, ‘না, ছবিতে যেও না। ’ বাবাও একই উপদেশ দিয়েছিলেন। চাচাজান, আব্বা ও আম্মির মনে হয়েছে, এটা দ্রুত পতন ঘটে এমন পেশা। ”

১৮তম মামি মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এক প্যানেল আলোচনায় আমির আরও জানান, পরিবার চেয়েছিলো স্থিতিশীল কিছু করুক তাদের ছেলে। ৫১ বছর বয়সী এই অভিনেতা বলেন, ‘চলচ্চিত্রাঙ্গনে এক মিনিটে ওপরে উঠতে পারেন, আবার এক মিনিটেই পতন হয়ে যায়। এখানে কোনো নিশ্চয়তা কিংবা নিরাপত্তা নেই। ’

‘পিকে’ তারকা বলেন, ‘পরিবার চেয়েছিলো আমি জীবনে স্থায়ী কিছু করি, স্থিতিশীল একটি পেশায় যেন থিতু হই। যেমন প্রকৌশলী, চিকিৎসক, চার্টাার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। কিন্তু এসবের কোনো কিছু করার মতো পড়াশোনা ছিলো না আমার। তবুও তারা চেয়েছিলেন ভালো কোনো পেশাদারি কোর্সে ভর্তি হই। আমরা এখন যেরকম পরিবর্তনশীল পেশায় আছি, পরিবার আমাকে এমন অনিশ্চয়তা এবং মানসিক অশান্তিতে ঠেলে দিতে চায়নি। ’

বলিউড সুপারস্টার আমির জানান, পরিবারের এমন চাওয়ার পরও লুকিয়ে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ায় (এফটিআইআই) একটি কোর্স করেন তিনি। তার ভাষ্য, ‘একটা বিষয়ে খুব সচেতন ছিলাম। কখনও চাইনি নাসির সাহেব ও আব্বাজানের মনে হোক, আমাকে রূপালি পর্দায় সুযোগ দেওয়া তাদের দায়িত্ব। তাদের মধ্যে কখনও এই উপলব্ধি তৈরি হতে দেইনি কিংবা তাদের বোঝা হয়ে উঠিনি। জানতাম আমি অভিনেতা হতে চাই। নিজের কাজ নিজেই করেছি। এফটিআইআই’তে গিয়ে চলচ্চিত্রের ওপর ডিপ্লোমা করেছি। কিন্তু কখনও ভুল করেও চাচাজান কিংবা আব্বাজানের কাছে বলিনি অভিনয় করতে চাই। ’

স্মৃতি রোমন্থন করে আমির জানান, দশম শ্রেণী উত্তীর্ণ হওয়ার পর সহপাঠী আদিত্য ভট্টাচার্যের পরিচালনায় ‘প্যারানয়া’ নামের ৪০ মিনিট ব্যাপ্তির একটি নির্বাক স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবিতে কাজ করেছিলেন তিনি। সহপাঠীই তাকে অভিনয়, সহকারী পরিচালনা ও স্পটবয়ের কাজ করতে বলেছিলেন। এ ছবিতে কাজ করার মাধ্যমে চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহী হয়ে ওঠেন তিনি। তার কথায়, ‘বাড়ির কেউই জানতো না ছবিটির কাজ করেছি। হকি ম্যাচ দেখতে যাচ্ছি এমন মিথ্যে বলে শুটিংয়ে যেতাম। ’

আমির জানান, বর্ষীয়ান অভিনেত্রী শাবানা আজমি তখন ছবিটি দেখে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন তাকে। তিনি বললেন, ‘শাবানাজি ছবিটি দেখে আমার ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলেন। তখন তিনি আমার বাবার সঙ্গে ‘খুন কি পুকার’ নামের একটি ছবিতে অভিনয় করছিলেন। পরিচয় জেনে তিনি আমাকে বললেন, ‘ও, তুমি তাহলে তাহির সাহেবের পুত্র! তাকে অবশ্যই বলবো তুমি চমৎকার অভিনয় করো!’ তার মুখে একথা শুনে বললাম- না-না। তাকে এটা বলবেন না। তখন তিনি বলেন, ‘তুমি দারুণ একজন অভিনেতা। তোমার অভিনয় করা উচিত। ’ তার প্রশংসা পেয়ে খুব ভালো লেগেছিলো। ”

নিজের অভিনীত ‘জো জিতা ওহি সিকান্দার’ (১৯৯২) ছবির কলাকুশলীদের পুনর্মিলনে অংশ হিসেবে আয়োজিত আলোচনায় এসব কথা বলেন আমির। এখানে তার প্রথম সংসারের কন্যা ইরা, ভাগ্নে ইমরান খান এবং আমিরের মা জিনাত হুসেনও ছিলেন। আমিরের পরা জার্সির পেছনে লেখা ছিলো মা জিনাতের নাম।

বাংলাদেশ সময় : ১৮১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৬
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।