বাংলা গানের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও বৈচিত্রপূর্ণ রূপ আছে। এই রূপকারদের অন্যতম অতুলপ্রসাদ সেন।
অতুলপ্রসাদের বৈচিত্রময় জীবনের নানা অনুভূতি আর মানবজীবনের বেদনাবহুল উপলব্ধি কবি-কল্পনাকে চিরদিন মগ্ন রেখেছিলো প্রেম, ভক্তি আর দেশাত্মবোধের মায়াজালে।
অতুলপ্রসাদ সেনের সৃজনশীল গানের সম্ভার নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে ‘মম মনের বিজনে’ শীর্ষক সংগীতানুষ্ঠান। এতে গান গেয়ে শোনাবেন লাইসা আহমেদ লিসা ও সিফায়েত উল্লাহ।
আগামী ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকার ফার্মগেটে ডেইলি স্টার-বেঙ্গল আর্টস প্রিসিঙ্কটে এর আয়োজন করেছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। সবার জন্য উন্মুক্ত।
১৮৭১ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন অতুলপ্রসাদ সেন। প্রতিদিন সকালে পিতা রামপ্রসাদ সেনের গাওয়া গান ও তার আবৃত্তি শিশু অতুলপ্রসাদকে দারুণ নাড়া দিতো। কৈশোরেই পিতার মৃত্যুর পর তিনি মাতামহ কালীনারায়ণ গুপ্তের আশ্রয়ে প্রতিপালিত হন। কালীনারায়ণ ছিলেন ভক্তিগীতি রচয়িতা ও গায়ক। তার প্রভাবেই সংগীত জগতে প্রবেশ ঘটে তার।
১৮৯০ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাশ করে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশোনা করেন অতুলপ্রসাদ। পরে ইংল্যান্ড থেকে ব্যারিস্টারি পাশ করে দেশে ফিরে আসেন। কলকাতায় আইন ব্যবসা শুরু করলেও লক্ষ্মৌতে আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান। লক্ষ্মৌর সাংস্কৃতিক জীবনধারার সঙ্গে নিজেকে বহুভাবে যুক্ত করেছিলেন তিনি।
অতুলপ্রসাদ সেনের শ্রেষ্ঠ পরিচয় গীত রচয়িতা, সুরকার ও গায়ক। গীতিবাহিত ভাবের সঙ্গে সুরের অর্থবহ সম্মিলনে তার গীতিকর্মের ভিত্তিভূমি গঠিত। লক্ষ্মৌতে হিন্দুস্তানি গীতরীতির সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। বাংলা কাব্যসংগীতের মূল মেজাজটি অক্ষুণ্ন রেখে তাতে ঠুংরি ও গজলের ঢং যুক্ত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করেন। কীর্তন, বাউল গানের গীতরীতিকে ও গভীর রসোত্তীর্ণভাবে নিজের সংগীতের সঙ্গে যুক্ত করেন তিনি। বিগলিত হৃদয় ভক্তিসংগীতে ও বেদনার্ত প্রেমগীতি এবং দেশপ্রেমের অত্যুজ্জ্বল গানে তার বিশিষ্টতা লক্ষণীয়।
বাংলাদেশ সময় : ১৮২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৬
জেএইচ