ওপার বাংলার প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী মৌসুমী ভৌমিক দীর্ঘদিন ধরে বাংলা লোকগান সংগ্রহ এবং এ নিয়ে গবেষণার কাজ করছেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি আবার ঢাকায় এসেছেন।
বাংলা সংগীতের সংস্কৃতির বৈচিত্র ও ইতিহাসকে উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে উপস্থাপন করার প্রয়াসে ছিলো দুই দিনের এ আয়োজন। গত ২২ নভেম্বর ও বুধবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঢাকায় জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের গ্যেটে ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় সম্মেলন। এর মূখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে সম্মিলিত উদ্যোগে লিপিবদ্ধকরণ, লেখনী, তৃণমূল পর্যায়ের গবেষণা, শিক্ষা উপকরণ এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক নথি অন্তর্ভুক্ত-পূর্বক একটি প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ।
বাংলা সংগীতের সমৃদ্ধ, বৈচিত্রময় এবং বহুজাতিক ইতিহাস রয়েছে। কিন্তু সংগীতপ্রেমী ও পন্ডিতদের জন্য বাংলাদেশের সংগীতের ইতিহাস এবং বর্তমান অবস্থা তথ্যসমৃদ্ধ নয়। অনলাইনেও তা সহজলভ্য নয়। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন আনার উদ্দেশে এবং এই সম্মেলনের মাধ্যমে কীভাবে এই উদ্যোগকে কাজে লাগিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ সাপেক্ষে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায় তা আলোচনা করতে সংগীতশিল্পী, বিশেষজ্ঞ, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও বিভিন্ন প্রজন্মের উদ্যমী সংগীতপ্রেমীদেরকে এখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
দুই দিনের এই সম্মেলনে ছিলো ব্যক্তিপর্যায়ের উপস্থাপনা, আলোচনা সভা, প্রশ্নোত্তর পর্ব, সংগীত শিক্ষা বিজ্ঞান শীর্ষক বৈঠক, সংগীত সাংবাদিকতা বিষয়ক পৃথক প্যানেল, ইউনেস্কোর ইন্টানজিবেল কালচারাল হেরিটেজ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে বাংলা সংগীতের বৈচিত্র রক্ষা বিষয়ক আলোচনা এবং প্রতিদিনের সংগীত পরিবেশনা।
সম্মেলনে সংগীতশিল্পী ও গবেষক মৌসুমী ভৌমিক ছাড়াও অংশগ্রহণ করেন জার্মানির ওয়েমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনেস্কো চেয়ার প্রফেসর ড: টিয়াগোদো অলিভিয়েরা পিন্টো, পোলিশ সাংবাদিক বরভিসাক, জার্মান সাংবাদিক জোহানেস থিউরার, অস্ট্রিয়ান প্রযুক্তিবিদ প্রফেসর এমিরিটাস ড: ওয়াল্টার কচ, জার্মান শিল্পী জর্গ স্যাপার, ড: ইভা মারিয়া, বাংলাদেশি সংগীত শিক্ষক-গবেষক ড: সায়েম রানা, ড: সায়মন জাকারিয়া, শেখ খালিদ হাসান, লাইভ স্কয়ারের স্বত্ত্বাধিকারী নাফিস আহমেদ এবং ইউনেস্কোর একটি প্রতিনিধি দল।
সম্মেলনে গ্যেটে ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের পরিচালক ফিলিপ কুপার এই উদ্যোগের মাধ্যমে সহজপ্রাপ্যতার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বাংলা সংগীতের সংস্কৃতিকে প্রসারিত করার ওপর জোর দেন। আলোচনায় বক্তারা বাংলা সংগীতের দৃশ্যমান্যতা ও প্রচারণার প্রসারকে গবেষণার মূল বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করেন।
এ ছাড়া আলোচকদের উপস্থাপনায় সংগীত শিক্ষা, সংরক্ষণ, প্রচারণা, মাঠ পর্যায়ের গবেষণার গুরুত্ব উঠে আসে। আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের পারস্পরিকতার মাধ্যমে একটি যথাযথ কাঠামোয় এই প্ল্যাটফর্মকে প্রতিষ্ঠিত করার সংকল্পে সম্মেলনটি সমাপ্ত হয়। এ আয়োজনের প্রথম দিন সন্ধ্যায় সংগীতশিল্পী শ্যামল পাল এবং বুধবার সন্ধ্যায় সম্মেলনের সমাপনীতে লোকজ সংগীত পরিবেশন করেন অনিমা মুক্তি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৬
জেএইচ