নাটাই-স্বরস্বতি দিয়ে শুরু। এরপর একে একে ত্যাগরাজের কম্পোজিশনে রাগ পন্তুবরালি, তামিল কম্পোজিশনে রাগ মুখারি এবং রাগ খাম্বাজ (রাগাম তালাম পল্লবী) ও আদি তালাম গেয়ে শোনান রঞ্জনী ও গায়ত্রী বালসুব্রমনিয়ান।
ঢাকার বনানীস্থ আর্মি স্টেডিয়ামে। রোববার (২৭ নভেম্বর) বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের চতুর্থ রাতে মঞ্চে আসেন রঞ্জনী ও গায়ত্রী। তারা কর্ণাটকি কণ্ঠশিল্পী ও বেহালাবাদক জুটি হিসেবে পরিচিত। অল্প বয়সেই সংগীত শিক্ষাশুরু হয় সম্মুখানন্দ সংগীত বিদ্যালয়ে অধ্যাপক টি.এস. কৃষ্ণস্বামীর কাছে। একক ও যুগল পরিবেশনা উভয়েই তাদের মুনশিয়ানার ছাপ রয়েছে। ড. বালমুরালি কৃষ্ণ ও টিবিশ্বনাথনসহ অন্যান্য বিশিষ্ট শিল্পীর সঙ্গে তারা মঞ্চ ভাগ করে নিয়েছেন।
রঞ্জনী ও গায়ত্রী তাদের পরিবেশনার জন্য বিভিন্ন পদক এবং খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। তাদের ত্যাগ ব্রাহ্ম গণসভার বাণী কলা সুধাকর পুরস্কার, ভারতীয় বিদ্যাভবনের আজীবন সম্মাননা, চেন্নাই সাংস্কৃতিক আকাদেমি প্রদত্ত সংগীত কলা শিরোমণি পদক, সংস্কৃতি পুরস্কার, কল্কি কৃষ্ণমূর্তি স্মৃতি পুরস্কার এবং আরও অনেক সম্মাননা অর্জন করেছেন তারা।
উৎসবে রঞ্জনী-গায়ত্রী যুগলবন্দি পরিবেশনা শেষ হয় বিটোভাচালা (রাগমালা) দিয়ে। যু্গলবন্দি কণ্ঠসংগীতের সঙ্গে বেহালায় চারুমতি রঘুরমণ, মৃদঙ্গমে কেসাই গিরিধর ও ঘটমে ছিলেন চন্দ্রশেখর শর্মা। তাদের হাতে উৎসবের সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।
এরপর সরোদ পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন পন্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার। প্রথমে রাগ গুঞ্জি কানাড়া দিয়ে শুরু করেন তিনি। পরে একে একে বাজিয়ে শোনান আলাপ জোড়ঝালা ও বিলম্বিত তিন তালে গৎ। শেষে রাগ যোগিয়া কালিংগ্রা বাজিয়ে শেষ করেন। তার হাতে উৎসবের সম্মাননা স্মারক তুলে দেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সরোদ গুরুর সঙ্গে তবলায় তাল দেন পন্ডিত যোগেশ শামসি।
চতুর্থ দিনের সবশেষে মঞ্চে ওঠেন পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী। রাগ বিলাস খনিতরী ও কুন্তল বাড়ালি পরিবেশন করেন তিনি। সবশেষে ছিলো রাগ ভৈরবীতে ভজন। তার সঙ্গে তবলায় সৌমেন সরকার, তানপুরায় অভিজিৎ কুণ্ডু ও হারমোনিয়ামে ছিলেন অজয় যোগলেকার। তাদেরকে উৎসব স্মারক প্রদান করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু।
রোববার সন্ধ্যা সাতটায় শুরুতেই মুনমুন আহমেদ তার দল ‘রেওয়াজ’কে নিয়ে পরিবেশন করেন দলীয় কত্থক নৃত্য। পরবর্তী পরিবেশনা ছিলো নীলেশ রণদেবের। তিনি তবলায় তিনতাল বাজিয়ে মুগ্ধ করেন দর্শকদের। হারমোনিয়াম সহযোগিতায় ছিলেন মিলিন্দ কুলকার্নি।
জয়তীর্থ মেউন্ডি রাগ শুদ্ধ কল্যাণ, আদানা ও নাট্যগীতে পরিবেশন করেন খেয়াল। তার সঙ্গে তবলায় ছিলেন আজিঙ্কা যোশি ও হারমোনিয়ামে মিলিন্দ কুলকার্নি। তাদেরকে উৎসব স্মারক দিয়ে সম্মানিত করেন বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন।
পরবর্তী পরিবেশনায় যুগলবন্দি তবলায় দর্শকদের মাতানপণ্ডিত যোগেশ শামসি ও পন্ডিত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। তারা তিনতাল পরিবেশন করেন। হারমোনিয়ামে ছিলেন অজয় যোগলেকার। তাদের হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদিক। সোমবার উৎসবের পঞ্চম ও শেষ দিনের আয়োজন শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৬
জেএইচ