৫৫ ঘণ্টা ধরে শুদ্ধসংগীত শুনছেন শহরের শ্রোতারা। এর মধ্যে বেশিরভাগই তরুণ-তরুণী।
রোববার (২৭ নভেম্বর) রাতে ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের সমাপনী অধিবেশনে এ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করলেন অতিথিরা।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক তরুণদের নিয়ে আশার সুরে বলেন, ‘এ উৎসবের দর্শক-শ্রোতার মধ্যে ২০ হাজারই তরুণ। তারা হয়তো শুদ্ধসংগীতের অনেক কিছুই বোঝে না, কিন্তু শুনলে তাদের মন খুশি হয়ে যায়, ভালো লাগে। এটা আমাদের জন্য আশার।
শুদ্ধসংগীতের বিশুদ্ধতাই নির্মল। এ আয়োজনের মাধ্যমে মানুষের মনে আলো জ্বালাচ্ছেন যারা, আমরা তাদের সঙ্গে আছি। ’
প্রধান অতিথি ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন স্যার ফজলে হাসান আবেদ তার বক্তব্যের শুরুতে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের রক্তে শুদ্ধসংগীতের ধারা বইছে। এই ভূখণ্ড থেকে একসময় ওস্তাদ আলী আকবর, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, পন্ডিত রবিশংকরের মতো শিল্পীর উত্থান হয়েছে। এই উৎসব চলমান থাকলে আমরা তরুণদের মধ্যে আগামীর আলাউদ্দিন খাঁ ও রবিশংকরকে পাবো। ’
সভাপতিত্ব করেন শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমেরিটাস ড. আনিসুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে উচ্চাঙ্গসংগীতের চর্চা যখন স্তিমিত হতে যাচ্ছিলো, তখন এই উৎসব সেই চর্চাকে আবার উজ্জীবিত করেছে। এটা একটা অসাধারণ ঘটনা যে শ্রোতারা মনোযোগ দিয়ে উচ্চাঙ্গসংগীত শুনছেন ও পরিতৃপ্তি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনায় এ-ও এক মাপকাঠি। ’
স্কয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘পৃথিবীর আর কোথাও এমন সুন্দর আয়োজনে উচ্চাঙ্গসংগীত শোনার সুযোগ হয় কি-না আমার জানা নেই। এখানকার তরুণ থেকে সব বয়সী শ্রোতারা শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে এ আয়োজন উপভোগ করছেন, এখানে সবাই অতিথি। ’
প্রয়াত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, প্রয়াত আলী আহমেদ হোসেন খাঁ, বালমুরালিকৃষ্ণ এবং হলি আর্টিজানে নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মৌলবাদী আক্রমণে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সমাপনী শেষে অতিথিদের হাতে উৎসবের সম্মাননা স্মারক তুলে দেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৬
জেএইচ