গাজীপুর চৌরাস্তার বাসিন্দা রাজু হাওলাদার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন বাবা মোস্তফা জালাল হোসেনের সঙ্গে। ফুফাত ভাইয়ের পা মচকে যাওয়ায় তাকে ভর্তি করতেই তাদের আসা।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণের পাশ দিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে প্রচুর জনসমাগম দেখে রাজুর কৌতূহল হলো। একজনের কাছে তিনি শুনলেন টেলিভিশনের শিল্পী-কলাকুশলীরা সমবেত হয়েছেন এখানে। ‘যেই শুনলাম মোশাররফ করিম এসেছেন, তাই পাগলের মতো ছুটে এলাম’- বাংলানিউজকে বললেন তিনি।
এতো তারকার সমাবেশ, রাজু ভাবলেন সাধারণভাবে ঢোকা যাবে না। তাই মুচির কাছ থেকে জুতার কালি ধার নিয়ে বুকজুড়ে লিখিয়ে নিলেন, ‘মোরা বাংলাদেশি স্টার জলসা চাই না!’ সঙ্গে মার্কার পেন দিয়ে এন্টেনাসহ পুরনো দিনের একটি টেলিভিশন আঁকা।
রাজু হালদারের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর ভান্ডারিয়া থানায়। ৯ বছর ধরে গাজীপুরে ব্র্যাক প্রিন্টিং প্যাকে মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করেন। বিনোদনপ্রেমী এই তরুণ বললেন, ‘তারকা দেখার জন্য নয়, বোধ থেকে শরীরে বিদেশি চ্যানেল বর্জনের বার্তা নিয়ে ঘুরেছি। বাংলাদেশে এতো এতো সুন্দর অনুষ্ঠান থাকতে কেনো আমরা বিদেশি চ্যানেল দেখবো? স্টার জলসার সিরিয়াল দেখে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া এমনকি আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে। আমরা এসবের পুনরাবৃত্তি চাই না। ’
‘শিল্পে বাঁচি, শিল্প বাঁচাই’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বুধবার সকাল সোয়া ১১টা থেকে বিকেল পাঁচটা অবধি টেলিভিশন শিল্পী ও কলাকুশলী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। টিভি সংশ্লিষ্ট কলাকুশলীদের ১৩টি সংগঠনের জোট সংগঠন ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন (এফটিপিও) আয়োজিত এ কর্মসূচিতে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
এর মধ্যে প্রথম ও পঞ্চম দাবি হলো দেশের বেসরকারি চ্যানেলে বাংলায় ডাবকৃত বিদেশি সিরিয়াল/অনুষ্ঠান এবং ডাউনলিংক চ্যানেলের মাধ্যমে বিদেশি চ্যানেলে দেশীয় বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করতে হবে। শিল্পী-কলাকুশলীদের পাশাপাশি রাজু হালদারের মতো দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সাধারণ মানুষরাও সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন>>>
* পাঁচ দফা দাবি না মানলে ১ জানুয়ারি থেকে গণআন্দোলন
* ১৬ ডিসেম্বর থেকে ডাবিংমুক্ত টিভি চ্যানেলের জন্য আলটিমেটাম
* ভিলেন ফরহাদ যেন এ যুগের নূর হোসেন!
* টেলিভিশন শিল্পী ও কলাকুশলী সমাবেশ শুরু
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৬
জেএইচ