ত্রিপুরার নাট্যদল নাট্যমঞ্চ ও বেসরকারি সংগঠন লার্নারস এডুকেশনাল সোসাইটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে ‘অমানিশা’। এটি লিখেছেন বাংলাদেশের নাট্যকার রুবাইয়াৎ আহমেদ।
ভারতের আগরতলায় চতুর্থ বর্ষ হীরালাল সেনগুপ্ত স্মৃতি নাট্যোৎসবে মঞ্চায়ন হবে নাটকটি। রবীন্দ্রভবন হলে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায় থাকছে এর প্রদর্শনী।
‘অমানিশা’র গল্প একটি নামহীন নগরের প্রেক্ষাপটে। সেখানে সবাই উল্টো হাঁটে। তাতেই তারা অভ্যস্ত এবং এটাই স্বাভাবিক মনে করে। সেই নগরে সবকিছু নির্দিষ্ট করে দেওয়া। ইতিহাস থেকে শুরু করে আচার-আচরণ সবই। এই নগরে কারও কোনো নাম নেই। সবাই পেশা অনুসারে শুধু নম্বর বা ডিজিটে পরিচিত।
নগরটিতে রয়েছে একটি কালো সুড়ঙ্গ। সেখানে কাউকে পাঠিয়ে দিলে আর ফেরত আসে না। সবাই জানে ওই সুড়ঙ্গ চলে গেছে মহানন্দলোকে, চিরপ্রশান্তির অঞ্চলে। নগরটিতে প্রতি বছর সেরা কৃতীমানকে পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার হিসেবে কৃতীব্যক্তিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ওই সুড়ঙ্গে।
এই নগরেই একজন কবি বাস করেন। সোজা হাঁটার দায়ে তার দুই পা কেটে নেওয়া হয়। তার ওপর নজরদারির জন্য নিয়োগ করা হয় এক নারীকে। এই কবিই কেবল বুঝতে পারেন সবাই আসলে উল্টো পথে চলছে। তিনি বিষয়গুলো নিয়ে একটি বই লিখেন। বইটি আলোচিত হয় এবং বিক্রিও হয় প্রচুর।
বইটিতে কবি আসলে এই অচলায়তনের অনেক গুমোর ফাঁস করে দেন। এ কারণে নগর প্রশাসন সব বই বাজেয়াপ্ত করে পুড়িয়ে ফেলে। প্রকাশকও নিখোঁজ। নগর প্রশাসকও একসময় বুঝতে পারেন, তিনি নিয়মের কাছে বন্দি হয়ে গেছেন। তারও নিজস্বতা বলে কিছু নেই। তিনি পরিকল্পনা করেন, নিজেকে ধ্বংস করার মধ্য দিয়ে এই নিয়মতান্ত্রিকতার বেড়াজাল ছিন্ন করার।
এবার নগর প্রশাসন কবিকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে। তাকে ঠেলে দেওয়া হয় সেই সুড়ঙ্গ মুখে। ঠিক তখন কবির ওপর নজরদারিতে নিয়োজিত নারী বাজেয়াপ্ত হওয়া বই থেকে কয়েকছত্র উচ্চস্বরে পাঠ করে মন্ত্রের মতো। এর ফলে চৈতন্য ফেরে নগরবাসীদের। তারা শাসনযন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে।
‘অমানিশা’ নির্দেশনা দিয়েছেন কলকাতার তরুণ নির্দেশক শুভজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিকল্পনায় মনিদীপ দাস সুমন। অভিনয়ে অমিতাভ, বাদল, কৌস্তভ, যিশু, সন্তোষ, সুজয়, সৌমিত, রত্নদীপ, মনিদীপ, ঋতুরেখা, সোনারেখা প্রমুখ। সহযোগিতায় ত্রিপুরার সংগীত-নাটক আকাদেমি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৬
জেএইচ