চলচ্চিত্রের সোনালী যুগ রাঙিয়েছেন তিনি। জনপ্রিয়তার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে গিয়েছিলেন বলে ‘নায়করাজ’ উপাধি পেয়েছেন।
কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় সরস্বতী পূজা চলাকালীন মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের জন্য তার গেম টিচার রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাকে বেছে নেন কেন্দ্রীয় চরিত্রে। নাটক ‘বিদ্রোহী’তে গ্রামীণ কিশোর চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়েই নায়করাজের অভিনয় জীবন শুরু।
কলেজ জীবনে ‘রতন লাল বাঙালি’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে রাজ্জাকের। ১৯৬৪ সালে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সময় পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন তিনি। এরপর ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ দিয়ে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তার।
নায়ক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ হয় জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে। এতে তার নায়িকা ছিলেন সুচন্দা। তারপর থেকে একাধারে অভিনয়, প্রযোজনা ও পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গণ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন এই কিংবদন্তি।
১৯৭৭ সালে ‘অনন্ত প্রেম’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। রাজ্জাক প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। বাংলা ও উর্দু মিলিয়ে প্রায় তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
সেরা অভিনেতা হিসেবে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। শিল্প-সংস্কৃতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি হিসেবে নায়করাজ ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পদক পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৪ সালে ‘কার্তুজ’ চলচ্চিত্রে রাজ্জাককে শেষবার দেখা যায় তাকে।
তিনি ১৯৬২ সালে খায়রুন নেসার সঙ্গে (লক্ষ্মী) বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির ঘরে জন্ম নেন রেজাউল করিম (বাপ্পারাজ), খালিদ হোসেইন (সম্রাট), নাসরিন পাশা শম্পা, রওশন হোসেন বাপ্পি, আফরিন আলম ময়না।
২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সবাইকে কাঁদিয়ে মহানায়ক পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের মতে, রাজ্জাকের মৃত্যুতে বাংলা চলচ্চিত্রের একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে।
‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘আলোর মিছিল’, ‘ছুটির ঘণ্টা’সহ মোট ৩০০টির বেশি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তার নিজের হাতে গড়া প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন।
বাংলাদেশ সময়:০৩৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২০
জেআইএম