এই পরিস্থিতিতে দেশের অন্য মানুষদের সঙ্গে ঘরবন্দি জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরও। আর এ কারণে পরিবারকে বেশি বেশি সময় দিতে পারছেন বাংলা গানের ‘যুবরাজ’খ্যাত এই শিল্পী।
আসিফ লেখেন, ‘ডেঙ্গু চিকুনগুনিয়া আমাকে সাতদিনের বেশি ঘরে আটকে রাখতে পারেনি। সন্ধ্যার পর কোন দাওয়াত থাকলে খুব অস্বস্তিতে থাকি। আমার ভাইবোনরাও সন্ধ্যার পর কোন পারিবারিক গেট-টুগেদার রাখে না, আমার যন্ত্রণায়। আমি সবসময় আমার নিজের একটা বলয়ের মধ্যে থেকেছি। সন্ধ্যার পর কোথাও গেলেও দ্রুত চলে আসার চেষ্টা করি। যারা আমাকে কাছ থেকে চেনেন তারা এই কালচারে অভ্যস্ত। আমাদের রুটিনবিহীন জীবনে রিজিকের দৌড়ঝাঁপে মাঝেমধ্যে খুব পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ি, রাত নয়টা দশটা বেজে যায় বিছানা ছাড়তে। বেগম বাসায় ছেলেদের এলান করে দেয় আজ তোমার বাবা অফিসে (স্টুডিও) যাবে না। রণ-রুদ্র (আসিফের দুই ছেলে) হাসে, তারা জানে একটু চাঙ্গা হলেই বেরিয়ে পড়বে বাবা!’
তিনি আরও লেখেন, ‘রণ-রুদ্রর সঙ্গে সারাদিন এটা সেটা নিয়ে বেগমের কাহিনী চলতে থাকে। আমি শুধু পর্যবেক্ষণ করি, প্রয়োজনে মাথা ঢুকাই। আজকালকার পোলাপানের তুলনায় আমরা অভিভাবকরা যে পিছিয়ে, এটা বেগম বুঝতেই চায় না যতক্ষণ না আমি বোঝাই। যখন আমার উপরে রাগান্বিত তখন তিনজনই চুপ হয়ে যাই। আমার আম্মা এসব ব্যাপারে যথেষ্ট টনটনে স্মার্ট ছিলেন, বেগম সেই তুলনায় একটু কম মেজাজি, অভিমানী বেশি। ’
এসব ঘটনার বর্ণনার কারণ সম্পর্কে জানিয়ে আসিফ লেখেন, ‘এসব কথা লেখার কারণ হচ্ছে পরিবার সম্বন্ধে একটু ধারনা দেওয়া। পরিবার হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখান থেকে লব্ধ জ্ঞান নিয়েই দুনিয়ায় চলতে হবে।
করোনার কারণে অনেকদিন পর বাসায় আমরা একসঙ্গে রাতের খাবার খেলাম। রণ বলেছে যতদিন এই সমস্যা থাকবে, আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে আমরা একসঙ্গেই দিনে-রাতে খাবো। ব্যাপারটা আমারও ভালো লেগেছে, আমিও ভবিষ্যতে চেষ্টা করবো পরিবারের সঙ্গেই খাবার খেতে। ছেলেদের সঙ্গে বেগমের লেগে যায়, লিমিট ক্রস করলেই তাদের পুরনো আদেশ মনে করিয়ে দেই। তোমাদের মায়ের সঙ্গে যা খুশী তর্ক করো, আমার বউয়ের সঙ্গে বেয়াদবি করা যাবে না। ’
সবশেষে আসিফ লেখেন, ‘এভাবেই আমরা আগলে রাখবো আমাদের পরিবার। অন্যথায় অশিক্ষা-কুশিক্ষার সন্তান বাবা-মা ও পরিবারের মর্যাদা বুঝবে না। যতই দিন যাবে পরিস্থিতি করুন থেকে করুনতর অবস্থায় যেতে থাকবে। এই অভিশপ্ত নাগপাশ থেকে মুক্তি মিলবে না প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২০
জেআইএম