চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের বিরুদ্ধে জমি ও স্থাপনা দখলের অভিযোগে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী কয়েকটি হিন্দু পরিবার। রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। এক ভিডিও বার্তায় বিষয়টিকে দুঃখজনক ও হাস্যকর বলেও আখ্যা দেন এই চিত্রতারকা।
এ বিষয়ে জায়েদ খান বলেন, ‘শিল্পী সমিতিতে যারা সহযোগী সদস্য হয়েছেন এবং যে গ্রুপটি নির্বাচন নিয়ে আমার বিরুদ্ধে কাজ করছে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। তারই অংশবিশেষ পিরোজপুরে ক্লিনিক দখলের অভিযোগ এনে প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে যে, জায়েদ খান হিন্দুদের ক্লিনিক দখল করেছে। ওই জমির সঙ্গে আমি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নই। ’
তিনি বলেন, ‘আমার বড় ভাই ওই ক্লিনিকের অর্ধেক মালিক। বাকি অর্ধেক কেনার জন্য তাদের টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা টাকা নিয়ে রেজিস্ট্রি করে না দিয়ে ঘুরাচ্ছে। তারই ফলশ্রুতিতে মামলা আদালতে চলমান। এটি আমার ভাইয়ের এবং তাদের একান্ত বিষয়। এর সঙ্গে আমি জড়িত নই। সেখানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সিনেমার গুটি কয়েক লোক, যারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিত্ত করেছে আবার তারাই টাকা দিয়ে কিছু লোকজনকে ভাড়া করে এনে আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন খবর ছড়াচ্ছে। যা খুবই দুঃখজনক। ’
জায়েদ খান আরও বলেন, ‘এমন ঘটনা যদি ঘটে থাকে পিরোজপুরের স্থানীয় প্রশাসন রয়েছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই হয়- এমন কোনও ঘটনা আদৌ ঘটেছে কিনা? দুই বছর আগেও ওই মহিলা একই অভিযোগ করেছিল। পিরোজপুর প্রেসক্লাবে বসে সমস্যা সমাধান করেছি। মিথ্যা একটা ঘটনা তুলে ধরে আমাকে খারাপ বানানোর চেষ্টা। এটা চরম ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ’
এর আগে মানববন্ধনে আসা ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ২০১৬ সালের ২১ মার্চ রাত ২টায় একটি পাঁচতলা ভবনের পঞ্চম তলায় জায়েদ খান ও তার কিছু অস্ত্রধারীলোক গীতা রানী ও তার পরিবারের ওপর হামলা চালান। এ সময় তারা জোরপূর্বক টাকা-পয়সা ও ক্লিনিকের অ্যাম্বুলেন্স লুট করে নিয়ে যান। এসব লুট করার আগে জায়েদ খান গীতা রানীদের মারধর করেন এবং তার স্বামীকে পিটিয়ে ঝিনাইদহে রেললাইনের ওপর ফেলে রেখে যান।
সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরে তারা জানান, এ বিষয়ে ২০১৬ সালের ২৬ মার্চ একটি এজাহার দায়ের করেছিল। এরপর থেকেই জায়েদ খান তার পরিবারকে নিয়মিত হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন। এছাড়া পাঁচতলা বাড়িটির বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন। বর্তমানে তারা ওই বাড়িতে থাকতে পারছেন না।
মানববন্ধনে জায়েদ খানের নামে অভিযোগ করে বলা হয়, ‘অন্তর জ্বালা’ সিনেমার শুটিংয়ের কথা বলে পিরোজপুর সদরে হিন্দু পরিবারের জমি ও ক্লিনিক দখল করেন জায়েদ খান। এর সঙ্গে জড়িত আছেন জায়েদ খানের ভাই ওবায়দুল হক পিন্টু ও শহীদুল হক মিন্টু।
এতে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হলে মহামান্য হাইকোর্ট আমাদের পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন। বর্তমানে তারা ঢাকায় অবস্থান করছেন। ‘ভূমিদস্যু’ জায়েদ খান গংয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে তারা সবার সহযোগিতা কামনা করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২২
এনএটি