ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

বেঁচে থাকলে আজ ৭৩ ছুঁতেন নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন

বিনোদন ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২২
বেঁচে থাকলে আজ ৭৩ ছুঁতেন নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন সেলিম আল দীন

প্রজ্ঞা, মেধা, মনন ও দক্ষতায় যে ক’জন নিরলস সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আমাদের বাংলার উর্বর সংস্কৃতিকে বহুমাত্রায় বহুদূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন তাদের মধ্যে অন্যতম। বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সেলিম আল দীনের ৭৩তম জন্মদিন।

সেলিম আল দীন ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট ফেনী জেলার সোনাগাজী থানার সেনেরখিল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি তিনি ঢাকায় মারা যান। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাকে সমাহিত করা হয়। যদি তিনি বেঁচে থাকতেন; আজ ৭৩ বছরে পা রাখতেন।  

সেলিম আল দীন ফেনী কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন ১৯৬৬ সালে। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। দ্বিতীয় বর্ষ পর্যন্ত পড়ার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দেন। টাঙ্গাইলের সরকারি সাদত কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি নেন। এরপর ১৯৯৫ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।

কর্মজীবনের শুরুতে বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কপি রাইটার হিসেবে চাকরি করেছেন সেলিম আল দীন। এরপর ১৯৭৪ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন এবং আমৃত্যু এই বিশ্ববিদ্যালয়েই ছিলেন। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন।

ঔপনিবেশিক সাহিত্য ধারার বিপরীতে দাঁড়িয়ে বাংলা নাটককে আবহমান বাংলার গতিধারায় ফিরিয়ে এনেছিলেন সেলিম আল দীন। নাটক রচনার পাশাপাশি নাটক নিয়ে তিনি গবেষণা চালিয়ে গেছেন আজীবন।  

বাংলা ভাষার নাট্যবিষয়ক কোষগ্রন্থ ‘বাংলা নাট্যকোষ’ সংগ্রহ, সংকলন, প্রণয়ন ও সম্পাদনা করেছেন তিনি নিজেই। তার রচিত ‘হরগজ’ নাটকটি সুয়েডীয় ভাষায় অনূদিত হয় এবং এ নাটকটি ভারতের রঙ্গকর্মী নাট্যদল হিন্দি ভাষায় মঞ্চায়ন করেছে। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জীবনাচরণ কেন্দ্রিক এথনিক থিয়েটারেরও উদ্ভাবনকারী তিনিই।  

সেলিম আল দীন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮৪, একুশে পদক ২০০৭, জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার ১৯৯৩, অন্য থিয়েটার (কলকাতা কর্তৃক প্রদত্ত সংবর্ধনা), নান্দিকার পুরস্কার (আকাদেমি মঞ্চ, কলকাতা) ১৯৯৪, শ্রেষ্ঠ টেলিভিশন নাট্যকার ১৯৯৪, খালেকদাদ সাহিত্য পুরস্কার, জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার (‘একাত্তরের যীশু’, শ্রেষ্ঠ সংলাপ) ১৯৯৪, মুনীর চৌধুরী সম্মাননা ২০০৫ সহ অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।

ব্যক্তিজীবনে ১৯৭৪ সালে সেলিম আল দীনের সঙ্গে বেগমজাদী মেহেরুন্নেসার বিয়ে হয়। একমাত্র সন্তান মঈনুল হাসানের অকালমৃত্যুর পর থেকে সেলিম আল দীন ছিলেন নিঃসন্তান।

এদিকে, সেলিম আল দীনের জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে পুষ্প অভিযাত্রা, মাস্টার ক্লাস ও নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ। দিনের শুরুতে সকাল দশটায় শুরু হয় পুষ্প অভিযাত্রা। দুপর ১২ টায় অনুষ্ঠিত হবে মাস্টার ক্লাস।

উল্লেখ্য, ‘তোমার সম্মুখে অনন্ত মুক্তির অনিমেষ ছায়াপথ’ স্লোগানকে ধারণ করে মহান এই নাট্যাচার্যের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান কর্মসূচির আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ।

জয়ন্তীর প্রথমদিনে সন্ধ্যা ৭টায় জহির রায়হান মিলনায়তনে ‘প্রাচ্য’ নাটক মঞ্চয়িত হবে। দ্বিতীয় দিনে ‘কিত্তনখোলা’ তৃতীয় দিনে ‘বনপাংশুল’ চতুর্থ দিনে ‘কেরামতমঙ্গল’ ও পঞ্চম দিনে ‘পুত্র’ নাটক মঞ্চায়িত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২২
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।