ভারতীয় বংশোদ্ভূত পাকিস্তানি গায়িকা নাইরা নূর (৭১) মারা গেছেন। করাচিতে নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশটির এই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী।
সুরেলা কণ্ঠের জন্য নাইরা নূরকে বলা হতো পাকিস্তানের ‘বুলবুল’। প্রায় পাঁচ দশকের ক্যারিয়ারে অসংখ্য জনপ্রিয় গান গেয়েছেন তিনি।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, নূরের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার ভাতিজা রানা জাইদি। কিন্তু নূরের মৃত্যুর সঠিক কারণ প্রকাশ করা হয়নি, তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি অসুস্থ ছিলেন এবং বেশ কিছুদিন ধরে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শনিবার (২০ আগস্ট) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এবং রোববার (২১ আগস্ট) তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এই জনপ্রিয় গায়িকার মৃত্যুতে পাকিস্তানের সংগীতাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নাইরা নূরের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘নাইরা নূর যেটাই গেয়েছেন, সেটাই পূর্ণতা পেয়েছে। তার মৃত্যুতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, তা কখনো পূরণ হবে না। নাইরা নূরের আত্মার শান্তি কামনা করছি। ’
এছাড়া পাকিস্তানের জনপ্রিয় গায়ক আলি জাফরসহ দেশটির অনেক তারকা গায়িকার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন।
১৯৫০ সালে ৩ নভেম্বর ভারতের আসামের গুয়াহাটিতে জন্মগ্রহণ করেন নাইরা নূর। ১৯৫৭ সালে মাত্র ৭ বছর বয়সে মা ও ভাই-বোনেদের সঙ্গে পাকিস্তানে চলে যান তিনি। তবে গায়িকার বাবা পারিবারিক সম্পত্তি দেখাশোনার জন্য ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত আসামেই ছিলেন।
ছোট থেকেই বেগম আখতারের গজল, কানন দেবীর ভজন শুনে বড় হয়েছেন নাইরা। বণিক পরিবারের মেয়ে ছিলেন তিনি। তবে নাইরার বাবা ছিলেন ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম লিগ’-এর সক্রিয় সদস্য।
লাহোরের ইসলামিয়া কলেজে পড়ার সময় কলেজের এক অধ্যাপক নইরা নূরকে গায়িকা হিসেবে প্রথম আবিষ্কার করেন। এরপরই তাকে লাহোরের ন্যাশনাল কলেজ অব আর্টসের এক অনুষ্ঠানে গাইতে বলা হয়। ১৯৭১ সালে প্রথমবার পাকিস্তানের একটি ধারাবাহিকের জন্য গান গেয়েছিলেন নূর।
‘ঘরানা’ ও ‘তানসেন’র মতো সিনেমায় গান গেয়ে সবার মন জয় করেছিলেন নাইরা নূর। পাকিস্তানের খ্যাতনামা গজল গায়ক মেহেদী হাসান, প্লেব্যাক সিঙ্গার আহমেদ রুশদির সঙ্গে গাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতির দেওয়া ‘প্রাইড অব পারফরম্যান্স’ পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছিলেন এই গায়িকা।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২২
জেআইএম