ঢাকা, শনিবার, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

দুর্গাপুরে আবার বন্য হাতির তাণ্ডব

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৯ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২৩
দুর্গাপুরে আবার বন্য হাতির তাণ্ডব সংগৃহীত ছবি

নেত্রকোনা: নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা বিজয়পুর, রানীখং, ভাংতিরপার, ভবানীপুর ও দাহাপাড়া গ্রামে নতুন করে শুরু হয়েছে বন্য হাতির তাণ্ডব। খাবারের সন্ধানে সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসছে এ হাতির দল।

এতে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ কৃষক পাশাপাশি চরম আতঙ্কে দিন কাটছে সীমান্তে থাকা গ্রামবাসীদের।  

রোববার (২১ মে) সকালে স্থানীয়রা বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ২.৫ একরের বেশি ধানক্ষেত নষ্ট করেছে হাতি।
হাতি তাড়াতে গিয়ে হাতির আক্রমণে ২ কৃষক নিহত ও আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১ জন। গাছপালা বিনষ্টসহ ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে অন্তত ২৫ জনের।  

এ নিয়ে সীমান্তবর্তী আড়াপাড়া, বিজয়পুর, ছনগড়া, রানীখং, বাদামবাড়ী, ভবানীপুর, দাহাপাড়া এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, গত চার দিন ধরে বন্য হাতির একটি দল অবস্থান করছে সীমান্তবর্তী ওই অঞ্চলে। দিনের বিভিন্ন সময়ে জমিতে নেমে বোরো ধান নষ্ট করা শেষে খাদ্যের সন্ধ্যানে এবার শুরু করেছে ঘর-বাড়িতে হামলা।

হাতি তাড়াতে  বাঁশি, ঘণ্টা বাজানো, পটকা ফোটানো, আগুন জ্বালিয়ে রাতভর পাহারা দেওয়ার পরেও দিনের বেলায় আক্রমণ শুরু করেছে হাতির দল। বাড়ি-ঘর ভেঙে ধান-চাল খেয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

স্থানীয় কৃষক আবুল কাশেম, সুচনা সাংমা, অশীল হাজং জানান, গত কয়েক বছর ধরেই হাতিগুলো ভারতীয় সীমান্ত পার হয়ে খাবারের সন্ধানে বাংলাদেশে নেমে আসে। পাঁচ মাস আগেও ভারতীয় হাতি দল বেঁধে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে প্রবেশ করে আমন ফসল ও ঘর-বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি করেছে। ওই সময় হাতি তাড়াতে গিয়ে আক্রমণে বিজয়পুর গ্রামে এক আদিবাসী কৃষকের মৃত্যুও হয়েছে।  

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল হামিদ বলেন, গতকাল রাত ২টা ৩০ মিনিটে ৫০-৫২টি বন্য হাতির দল অতর্কিতে আক্রমণ করে তিনটি ঘরের ভেতরে থাকা খাট, আলনা, টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ভেঙে ঘরে থাকা অন্তত ৩০ মণ ধান নষ্ট করে ফেলে। আমরা এখন চরম আতঙ্কে বসবাস করছি।

ইউপি চেয়ারম্যান সাদেকুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার বন্য হাতির তাণ্ডব বেশি। হাতির তাণ্ডবে গুরুতর আহতদের পরিবারে ইতোমধ্যে নগদ অর্থ সহায়তা করা হয়েছে, সেই সঙ্গে রাতে পাহারা দেওয়ার জন্য গ্রামবাসীদের হাতে হাতে বাঁশি ও টর্চলাইট বিতরণ করা হয়েছে।
তবে এর সঠিক সমাধান প্রয়োজন।

উপজেলা নির্বাহী অকর্মকর্তা মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, বন্য হাতির পাল বেশ কয়েক দিন ধরে আবারও বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। এ থেকে সতর্ক থাকতে স্থানীয়দের বলা হয়েছে। বন্য হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ইতোমধ্যে সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় দুই দেশের পতাকা বৈঠক শুরু হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করাও হয়েছে। এর সঠিক সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।