মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলাবাসীদের মাঝে দেখা দিয়েছে বাঘ আতঙ্ক। উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের হাসনাবাদ এবং বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দারা বাঘের আতঙ্কের মাঝে দিন কাটাচ্ছেন।
এলাকা সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই হাসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে রাতে দুইটি বাঘকে চলাচল করতে দেখেছে এলাকাবাসী। সারা রাত বিচরণের পর ভোরের দিকে বাঘ দুইটি পাশের বন-জঙ্গলে চলে যায় এমনটাই আপাতত ধারণা করছেন এলাকার বাসিন্দারা।
ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে বাঘের দেখা সম্প্রতি পাওয়া না গেলেও সজাগ থাকে এ গ্রামের বাসিন্দারাও। আগেও এ এলাকা জঙ্গলে ঘেরা ছিল। চলাচল ছিল বাঘ, শিয়াল, হরিণ, গন্ধগোকুলসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর। এখনো মাঝেমাঝে খাবারের জন্য দুই একটি বাঘ লোকালয়ে চলে আসে বলে জানায় স্থানীয়রা।
হাসনাবাদ গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন মোজাম্মেল হোসেন। তার কাছে এলাকায় বাঘের ব্যাপারে জানতে চাইলেন বলেন, আমি যদিও দেখিনি তবে শুনেছি ইদানিং স্কুল মাঠে (হাসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) দুইটি চিতা বাঘ ঘুরাফেরা করে। এ এলাকায় এসব অস্বাভাবিক কিছু না। আগে এখানে বাঘ, হরিণের চলাচল ছিল। বাঘ আক্রমণ করতে পারে এই আতঙ্কে গ্রামবাসী পালা করে রাতে পাহারা দিচ্ছে।
এলাকাবাসী জানায়, এই এলাকায় এক সময় পাহাড় জঙ্গল ছিল। আগে মানুষের বসতি ছিল না। তখন এসব এলাকায় বড় বড় বাঘ, হরিণ, হাতিসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী ছিল। ধীরে ধীরে মানুষের বসতি গড়ে ওঠার কারণে এসব পশু-পাখি চলে যায়। এখনও বাহাদুরপুরের আগে কিছু জঙ্গল রয়েছে যেসব এলাকায় কিছু বন্যপ্রাণী বসবাস করে। বেশিরভাগ সময় বানরের দল খাদ্যের অভাবে লোকালয়ে এসে বসতবাড়ির ফলমূল খেয়ে চলে যায়। এখনও সন্ধ্যার সময়ে এসব এলাকায় শেয়ালের পাল নামে।
তবে গত কয়েকদিন থেকে সন্ধ্যার পর দুইটি বাঘ দেখতে পাচ্ছেন স্থানীয়রা। যেকোনো সময় আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে রাত জেগে পাহারা দেওয়া হচ্ছে বলে তারা জানান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আজাদ মিয়া জানান, কয়েকজন নারী বাঘ দেখেছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। বাঘগুলোর উপস্থিতি সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করা গেলে বন্যপ্রাণী অফিসে খবর দেওয়া হবে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মৌলভীবাজারের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এসব এলাকায় চিতা বাঘ থাকার কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই, তবে মেছো বিড়াল হয়ে থাকতে পারে। লোক পাঠিয়ে খবর নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২৩
বিবিবি/এএটি