মৌলভীবাজার: প্রকৃতি চলছে হেমন্ত। রাতের কুশায়ায় ভরে উঠে চারদিকের পরিবেশ।
মাঝারি ধরনের হলুদ রঙের এই প্রজাপতির আসলে বাংলা নাম নেই। তবে প্রস্তাবিত বাংলা নামটি হলো ‘ত্রিদাগি হলুদ প্রজাপতি’। ইংরেজি নামানুসারে বাংলা এ নামটির দেয় হয়েছে।
এ প্রজাপতির ইংরেজি নাম Three-spot Grass Yellow এবং বৈজ্ঞানিক নাম Eurema blanda. এরা মাঝারি আকারের এক ধরনের হলুদ বর্ণের প্রজাপতি। প্রসারিত অবস্থায় এদের ডানার আকার ৪০-৪৫ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।
চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলে সম্প্রতি এক চা সেকশনে (সুনির্দিষ্ট সীমানায় চা আবাদের এলাকা) অনেক সময় ধরে পর্যবেক্ষণ করে এদের একটি বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাওয়া গেছে। আর তা হলো, ‘ত্রিদাগি হলুদ প্রজাপতি’ চা গাছের পাতাপ্রিয় প্রজাপতি। চায়ের পাতায় পাতায় বসে থাকে চুপিসারে। কখনো অল্পক্ষণ। আবার কখনো বহুক্ষণ ধরে। যেন অন্যত্র উড়ে যাওয়ার ইচ্ছে নেই। চা-পাতা ছাড়া অন্যদিকে নেই তার মনোযোগ।
মজার একটি বিষয় দেখা গেল, চা গাছের পাতায় যে ‘ত্রিদাগি হলুদ প্রজাপতি’টি নীরবে বসে আছে, হঠাৎ বলা নেই-কয়া নেই অপর একটি ‘ত্রিদাগি হলুদ প্রজাপতি’ এসে তাকে দুষ্টুমি করে তার গায়ে ধাক্কা দিয়ে তাকে অনাসায়ে উড়িয়ে দিলো। ওকে তাড়িয়ে সেও আর এই স্থানে এসে বসলো না। তারপর ওরা একত্রে শুরু করে দিলো ওড়াউড়ি! প্রকৃতির এই অদেখা সৌন্দর্যটুকু শুধুই বিস্ময়ে ভরা।
প্রজাপতি এমনিতেই অস্থির স্বভাবের পতঙ্গ। তবে কিছু কিছু প্রজাতি রয়েছে কিছুক্ষণ নিশ্চুপ বসে থাকে। ‘ত্রিদাগি হলুদ প্রজাপতি’ এ স্বভাবের নয়। চা বাগানের গাছগুলো এখন ‘ত্রিদাগি হলুদ প্রজাপতি’দের দখলে। একাকী কিংবা দ্বৈতভাবে অথবা সদলবলে চলছে তাদের খুনসুটি!
শুধুই সৌন্দর্য বাড়ানো নয়, ওরাই প্রকৃতির সুস্থতা জানান দেওয়ার তাদের এই নিরন্তর প্রয়াসটুকু চালিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন ধরে। এ যেন চা বাগানের এক অন্যরকম প্রাকৃতিক অনুভূতি। এরাই চা জনপদের সুস্থতার প্রতীক।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩
বিবিবি/এএটি