তিন ভাগ জল আর এক ভাগ স্থল নিয়ে আমাদের পৃথিবী। মহাকাশ বিজ্ঞানীরা আবার পৃথিবীকে একটি জলময় গ্রহ বলেও আখ্যা দিয়েছন।
ছয় হাজার ফুট গভীরতার নিকষ কালো এবং শীতল পরিবেশের মহাসাগরগুলো মানুষের জন্য আজও বিস্ময়কর ও রহস্যময়।
কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা অবিরাম চেষ্টা করে যাচ্ছে সাগরতলের রহস্যভেদের কিংবা সাগরতলের বৈচিত্র্যময় প্রাণীদের কথা জানতে।
১০ বছর ধরে সাগরতলের শুমারি শেষে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রায় আড়াই লাখ প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণী শণাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এখনো কমপক্ষে সাড়ে সাত লাখ প্রজাতি অনাবিষ্কৃত রয়েছে বলে ধারণা তাঁদের।
তবে সক্রিয়ভাবে বেঁচে থাকা প্রজাতির সংখ্যা কত হতে পার সে ব্যাপারে সঠিক কোনো ধারণা দিতে পারেননি তাঁরা। বলেছেন, সামুদ্রিক প্রজাতির নির্ভরযোগ্য হিসাব বের করতে আরো এক দশকের শুমারি প্রয়োজন।
তবে যে পরিমাণ প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতি শনাক্ত হয়েছে, সম্ভাব্য অণুজীবের পরিমাণের কাছে তার সংখ্যা একেবারেই নগণ্য। সামুদ্রিক অণুজীবের সংখ্যা কয়েক হাজার কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অ্যান্টার্কটিকার হিমশীতল এবং দুর্ভেদ্য পানিতেও বিপুল পরিমাণ প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে।
জলজ প্রজাতির বিস্ময়কর ও বিচিত্র তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে, এসব প্রাণীর ওপর মানুষের তৎপরতা এবং দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাগরতলে অতিরিক্ত মাত্রার সুযোগ নেওয়া, প্রাণীদের আবাস নষ্ট করা, দূষণের কারণে অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত এবং অনেক প্রজাতি খাদ্য সংকটে পড়েছে।
মানুষের সাথে সমুদ্রের ঘনিষ্ঠতা বহু প্রাচীন। তবু এ সমুদ্র এখনো মানুষের কাছে অজানা রহস্যময় এবং ভয়ঙ্কর। আমাদের জীবনের অনেক কিছুর উপরেই রয়েছে সমুদ্রের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রভাব।
দৈনন্দিন জীবনের অনেক বস্তুর উৎস সমুদ্র। খাবার ছাড়াও জ্বালানী তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লাসহ আরো অনেক খনিজ দ্রব্য আহরণের কেন্দ্রবিন্দু সমুদ্র।
আর এই সমুদ্র তীরেই স্থাপিত হয়েছে পৃথিবীর অনেক বড় বড় শহর।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
আবুল কালাম আজাদ, নিউজরুম এডিটর