মৌলভীবাজার: আমাদের পরিবেশের উপকারী ‘বন্ধুরা’ আজ বড়ই বিপন্ন। যেভাবে বিপন্ন শকুন।
কিন্তু উপকার করলে কী হবে? সেসব কথা আজ অতীত! কারণ বিপন্নের তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় গুইসাপ ‘কালো গুঁই’। এদের বিপন্ন হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জলাভূমিগুলো ধ্বংস।
বাসস্থান উজার ও খাদ্য সংকট কালো গুঁইসাপের অস্তিত্বকে আজ হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) এর তথ্য মতে এই ‘কালো গুঁই’ প্রাণীটি বাংলাদেশে আজ বিরল।
দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক বন রেমাকালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রমে এ প্রাণিটিকে দেখার আগ্রহে দু’দিন অবস্থান করেও তার দেখা মিললো না। প্রাণী গবেষক ও আলোকচিত্রীদের মুখে সেখানে প্রাণীটির বসবাসের কথা শুনে সেখানে যাওয়া। কিন্তু ফিরে আসতে হলো বিষন্ন মনে।
সাঈদ বিন জামাল পেশায় ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ। প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী গভীরভাবে ভালোবাসেন বলে দীর্ঘদিন ধরে বন্যপ্রাণীর উপর ফ্রিল্যান্স আলোকচিত্রী হিসেবে দেশের নানা জায়গায় কাজ করে চলেছেন।
সাঈদ বিন জামাল বাংলানিউজকে বলেন, স্বাভাবিকভাবে তিন প্রজাতিকে একসাথে ‘গুঁইসাপ’ বলে। কিন্তু তিনটাই ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতি। বাংলাদেশে তিন ধরনের গুঁইসাপ দেখা যায়। বাংলা গুঁইসাপ (Bengal monitor), হলদে বা সোনা গুঁই (Yellow monitor) এবং রামগদি বা কালো গুঁই (Water monitor বা Ring lizard)। কালো গুঁই আমাদের দেশের সর্ববৃহৎ গুঁইসাপ এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গিরগিটি।
এর শারীরিক গঠন সম্পর্কে তিনি বলেন, সাধারণত এদের দেহ লম্বায় ১০৫ সেন্টিমিটার (সেমি) এবং লেজসহ ১৫০ থেকে ২০০ সেমি হতে পারে। ওজন ৮ থেকে ২০ কেজি। কোন-কোনটা আবার ৫০ কেজি পর্যন্তও হতে পারে। এরা দিবাচর। গাছে চড়া, দৌঁড়ানো ও সাঁতারে এরা অত্যন্ত দক্ষ।
প্রাণীটির বৈশিষ্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এরা শান্ত প্রকৃতির। বিরক্ত না করলে প্রাণীটি কাউকে আক্রমণ করে না (এবার প্রাণীটির ছবি ধারণ করতে চার/পাচ ফুট দূরত্বের কাছাকাছি গেলেও প্রাণীটি তাতে বিরক্ত হয়নি)। সিলেট অঞ্চলের মিশ্র চিরসবুজ বন এলাকা এবং জলাভূমিতে এদের দেখা যায়। বর্ষাকাল এদের প্রজনন মৌসুম।
বন ও বাসস্থান ধ্বংস এবং চামড়ার জন্য এ প্রাণীকে ক্রমাগত হত্যা ইত্যাদি কারণে বর্তমানে গুঁইসাপ অত্যন্ত ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলে জানান এই গবেষক।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৬
বিবিবি/এসআর