ঢাকা: বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি-অনিয়মের কথা তুলে ধরে ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, দুনিয়ার যত চিট আমার মন্ত্রণালয়ে এসে হাজির হয়েছে। বিশ্বাস করুন বা নাই করুন এটাই সত্যি কথা।
শনিবার (২০ আগস্ট) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের সেমিনার কক্ষে এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে ঢাকা মহানগরীর ওপর প্রভাব এবং বাস্তুচ্যুত মানুষের ঢাকায় অভিগমন ও জীবন ধারণ’ বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং কর্মশালায় তিনি বক্তব্য রাখেন।
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে অন্য দেশগুলোর সমালোচনা করে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, বৈশ্বিক সভায় বলা হয় তোমার দেশ পানির নিচে চলে যাবে। আমি জিজ্ঞাসা করি- আমার দেশ যাবে, তোমার ক্যালিফোর্নিয়া যাবে না? ওয়াশিংটন ডিসি যাবে না? আসলে তাদের যেসব দ্বীপ আছে সেগুলোও যাবে। পৃথিবীতে জলবায়ু পরিবর্তন সবসময়ই ছিল। এর সঙ্গে মানুষ নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতো। কিন্তু এখন আমরা বহিঃবিশ্বের কথা বলি। নিজেরা কী করছি! গ্রাম থেকে শহরে আসার সময় সব বর্জ্য নদীতে ফেলছি।
‘আমাদের দেশে শহরে উচ্চবিত্তদের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। শহরে যত কোটি টাকা খরচ করে ফোয়ারা করা হয়, তা দিয়ে বেশ কয়েকটি উপজেলায় পাকা রাস্তা তৈরি সম্ভব,’ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন মন্ত্রী।
নিজের মন্ত্রণালয়ের ওপর বিষোদ্গার করে তিনি বলেন, খুলনায় আমরা একটি পানি শোধনাগার স্থাপন বাস্তবায়ন করছি। মন্ত্রণালয় থেকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রকল্প হাতে নিয়েছি। তবে দুনিয়ার যত চিট আমার মন্ত্রণালয়ে এখন সমবেত হয়েছে। বিশ্বাস করুন বা নাই করুন এটাই সত্যি। আজকেও একজনের বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছি। একজন কর্মকর্তাকে বলেছি- আমি স্বাক্ষর করবো না, আপনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যান।
তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকায় মানুষ আসবেই। পানি খাওয়ার জন্যও আসবে। শুধু যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আসবে তা নয়।
মন্ত্রী বলেন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে আপনি যখনই অন্যের অর্থে কাজ করতে যাবেন তখন তাদের বিশেষজ্ঞ আসবেন। তাদের কথা অনুযায়ী কাগজে স্বাক্ষর দিতে হবে। যে টাকা বরাদ্দ আসবে তার বেশির ভাগ খরচ হয়ে যায় পরামর্শে।
ঢাবির ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুনের সভাপতিত্বে নগর গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বলেন, উষ্ণতার ফলে যে জলবায়ুর পরিবর্তন হবে, দেশের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ জমি পানির নিচে চলে যাবে। তার ফলে চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে ঢাকায় আসতে পারেন। তাদের বিষয়েও আমাদের ভাবতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ঢাবির উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীর আহমাদ, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী জ্ঞান রঞ্জন শীল।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৬/আপডেট ১৪২৬
এনএ/আইএ