পটুয়াখালী: এক সঙ্গে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার অন্যতম স্থান পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত।
সড়ক পথের উন্নয়ন ঘটনায় এবং নৌ পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরামদায়ক হওয়ায় সারা বছর পর্যটকদের পদচারনায় কমবেশি মুখর হয়ে থাকে কুয়াকাটা।
কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সমুদ্রের নোনাপানির ঢেউয়ের আঘাতে ক্ষয় হচ্ছে সৈকত। বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের পানির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও ঢেউয়ের তাণ্ডবে এ বছরও সৈকত তীরের ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ক্ষয় হচ্ছে বালুর, দেখলে মনে হবে প্রশস্ততা কমে আসছে সৈকতের।
এরই মধ্যে সৈকতে গড়ে ওঠা কিছু স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের শিকার হয়েছে সড়ক ও বেড়িবাঁধ। সৈকতে চোখে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গাছপালা।
দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকতের কয়েক কিলোমিটার বেলাভূমি জুড়ে ছড়িয়ে আছে গাছপালা ধ্বংসের চিহ্ন। ইটপাথরের খণ্ডের পাশাপাশি উপরে পড়া বড় বড় গাছ, গাছের কাণ্ড ও শেকড় সৈকতের ভঙ্গুর দৃশ্যের প্রমাণ।
এছাড়া যেসব স্থাপনা, বাগান এরই মধ্যে ভেঙে গেছে, সেসব স্থাপনার মূল অবকাঠামো এবং গাছের কাণ্ড থেকে শীর্ষ অব্দি সরিয়ে নেওয়া হলেও মাটির নিচের অংশ সরানো হয়নি। ফলে তা ধীরে ধীরে বেড়িয়ে এসেছে। সৈকত জুড়ে রয়েছে উপরে পড়া কড়াই, নারকেল, ঝাউসহ বিভিন্ন গাছ ও গাছের গুঁড়ি। যা সৈকতে পর্যটকদের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত করছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী, ফটোগ্রাফাররা ঝুঁকিপূর্ণ কিছু এলাকায় লাল নিশানা উড়িয়ে চিহ্নিত করে রাখলেও ভরা জোয়ারে সেটাও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে না।
পর্যটকদের নির্বিঘ্নে চলাচলের সুবিধার্থে ধ্বংসাবশেষগুলো দ্রুত সরিয়ে নেওয়া ও ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে স্থানীয় হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বাংলানিউজকে জানান, সৈকত ও সৈকত সংলগ্ন রাস্তাঘাট ভাঙছে। সৈকতের বালু সরে গিয়ে গোড়া উপরে গাছ পড়ে যাচ্ছে। বেড়িবাঁধের বাইরেও আবাসিক হোটেলসহ বহু স্থাপনা রয়েছে, তা রক্ষা করতে হলে সৈকত রক্ষা করা জরুরি। কারণ এই সৈকতকে ঘিরেই এখানাকার বেশিরভাগ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন এবং সরকারকে রাজস্ব দেন।
সৈকতে পড়ে থাকা গাছ, বিভিন্ন স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ দ্রুত সরিয়ে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন কুয়াকাটা সি-বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যরা।
গাছ উপরে পড়ার বিষয়ে মহিপুর রেঞ্জ অফিসের বন কর্মকর্তা এসএম শামসুদ্দোহা বাংলানিউজকে জানান, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর সময় সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে নারকেল গাছ ছাড়াও সৈকতের ঝাউবনের ৮৫টি ঝাউগাছ, ১৮টি আকাশমনি গাছ, তিনটি অর্জুন গাছ, তিনটি কড়াই গাছ, একটি রেইনট্রি গাছ, একটি শিল কড়াই গাছ এবং একটি তুলা গাছ উপড়ে গেছে। সেগুলো নিয়ে আসা হয়েছে, যা পরে নিলামে বিক্রি হবে।
এখন যে গাছগুলো সৈকতে পড়ে আছে সেগুলোও পর্যায়ক্রমে সরিয়ে আনা হবে। তবে এ কাজে অর্থ ও লোকবল সংকট রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৬
এসআই