শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): শ্রীমঙ্গলের সিন্দুরখান ইউনিয়নে ১৫ কেজি ওজনের একটি হরিণকে জবাই করা হয়েছে। দীর্ঘসময় প্রচেষ্টার পরও হরিণটির মাংস উদ্ধার করা সম্ভব না হলেও আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয় চামড়াটি ।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে সিন্দুরখান ইউনিয়নের সাইটোলা গ্রামে হরিণ হত্যার ঘটনাটি ঘটে। এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে।
তবে এই মামলাটি না করার জন্য চলছে জোর অনুরোধ ও নানা তদবির। মৌলভীবাজার বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ সূত্র জানায়, একটি হরিণ জবাই করা হচ্ছে-এমন সংবাদের ভিত্তিতে সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) সকাল সাতটায় বিজিবি-৪৬ ব্যাটালিয়নের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে সাথে সাথে বেড়িয়ে পড়েন।
কিন্তু সঠিক স্থানটি খুঁজে বের করতে বেশ কিছুটা সময় অতিবাহিত হয়ে যায়। এর মধ্যে দুর্বৃত্তরা গোপনে হরিণটিকে জবাই করে মাংস গুম করে ফেলে। পরে বন কর্মকর্তারা একটি বাড়ির পাশের ধানক্ষেতে জবাইকৃত হরিণটির রক্ত দেখতে পান।
এ ব্যাপারে সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. তবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মায়া হরিণ অত্যন্ত নিরীহ একটি প্রাণী। দুষ্কৃতীকারীরা এভাবেই বনের প্রাণীদের হত্যা করে এদের ‘বিপদাপন্ন প্রজাতি’তে পরিণত করছে। আমরা এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাইটোলা গ্রামের আতাউর রহমান ও জিয়া উদ্দিনের বাড়িতে হরিণটিকে জবাই করা হয়। ওরা দুজনেই আপন সহোদর এবং তাদের পিতার নাম মৃত চুরক মিয়া। প্রায় চার-পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টা করেও সেই হরিণের মাংসগুলো উদ্ধার করতে পারিনি।
তিনি আরো বলেন, ওই এলাকার মনির, নুর ইসলাম, সমসের ও জমসেদ এই ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
সিঁন্দুরখান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হেলাল বলেন, ঘটনাটি সত্য এবং খুবই মর্মান্তিক। ইতোপূর্বে কখনো এমন ঘটনা আমার এলাকায় ঘটেনি। এরা বন্যপ্রাণী সম্পর্কে সচেতন নয় বলে না জেনে এমনটি করেছে।
স্থানীয় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের না করার জন্য এসিএফকে এর কাছে এই প্রতিবেদকের সামনেই তদবির করেন সাইটোলা এলাকার সাবেক কাউন্সিলার ইউসুফ খানের নেতৃত্বে তিন-চার জন ব্যক্তি।
এর আগে দুর্বৃত্তদের হাত থেকে উদ্ধার করা হরিণটিকেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বুধবার সকালে বিজিবি-৪৬ ব্যাটেলিয়ানের সদস্যরা আদমপুরের সংরক্ষিত বন থেকে হরিণটিকে উদ্ধার করে ওই দিনই সেবা-শুশ্রূষার জন্য শ্রীমঙ্গলের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সীতেশ রঞ্জন দেবের হাতে তুলে দেয়। শ্বাসনালীতে চাকু দিয়ে আঘাত করার কারণে মারাত্মক অাহত হয় হরিণ শাবকটি।
আরও পড়ুন-শ্রীমঙ্গলে মায়া হরিণ উদ্ধার
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৬
আরআই