ধুনট (বগুড়া): বগুড়ার ধুনট উপজেলার মাধবডাঙ্গা গ্রামের সরকার বাড়িতে গড়ে ওঠা পাখির নিরাপদ আবাস স্থলে হানা দেওয়ায় বড় একটি বাজপাখি আটক করেছে স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে পাখিটি আটক করা হয়।
বাড়ির মালিক রবিউল হাসান ভুটান সরকার জানান, প্রায় ২২ বছর ধরে গ্রীষ্মকালে পানকৌড়ি, ঘুঘু, সাদা বক, শালিক, বালি হাঁস, শামুকভাঙ্গাসহ নানা প্রজাতির পাখি ঝাঁক বেধে তার বাড়িতে আসে। বাড়ির বিভিন্ন গাছে নিরাপদ আবাসস্থল গড়ে তোলে পাখিরা। এসব পাখি বাড়ির বিভিন্ন গাছে বাসা বেধে সেখানে বাচ্চা ফোটায়। এরপর শীত এলে পাখিরা এই বাড়ি ছেড়ে অজানার উদ্দেশে পাড়ি জমায়।
সেই ধারাবাহিকতায় এবারও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বাড়ির গাছে গাছে বাসা বেধেছে। কিছু কিছু পাখি এরই মধ্যে নীড়ে ডিম পেড়েছে। অনেক পাখি নীড় তৈরি করছে।
ভুটান সরকারের দাবি, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে দু’টি বাজপাখি তার বাড়িতে এসে অন্য পাখিদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল। তার বাড়িতে এবারই প্রথম বাজপাখি এসেছে। বাজপাখি প্রথম ছোট ছোট পাখি খেয়ে ফেলছিল। পাখির বাসা ও ডিম নষ্ট করছিল। বাজপাখির আক্রমণে ছোট ছোট বেশ কয়েকটি পাখি আহত হয়েছে। ফলে বিভিন্ন ধরনের পাখির নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত এই বাড়িতে অন্যান্য পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বাজপাখির ভয়ে অনেক পাখি বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। এ কারণে কয়েক দিন ধরে চেষ্টা করে কৌশলে একটি বাজপাখি আটক করেছেন তারা।
একটি বাজপাখি আটক করার পর অন্য বাজপাখিটি এ বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। অন্যান্য পাখি যেন নিরাপদে থাকতে পারে সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি করেন বলে জানান পাখি বাড়ির মালিক ভুটান সরকার।
তবে, বাজপাখিটি ধরার চেষ্টা করার সময় কিছুটা আঘাত পেয়েছে। এছাড়া বৃষ্টির পানিতে ভিজে দুর্বলও হয়ে পড়েছে। বাজপাখিটি নিরাপদে রেখে পরিমিত খাবার ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বাধীন জীবন-এর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক নাসিম বলেন, বাজ হিংস্র প্রজাতির পাখি। বাজপাখিরা সাধারণত ছোট ছোট পাখির ক্ষতি করে। ভুটান সরকারের বাড়িতে অন্যান্য পাখির মধ্যে আধিপত্য বিস্তার করতে দু’টি বাজপাখির আগমণ ঘটে।
ধুনট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৬
এসআই