ঢাকা: বেসরকারি খাতকে আরও যুগপতভাবে সম্পৃক্ত করে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা এবং মহাবিপন্ন বাঘ সংরক্ষণে টেকসই উদ্যোগকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে শেষ হলো ‘গ্রেটার ডায়ালগ ফর আ গ্রেটার কজ’।
শনিবার (০৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে সরকারি-বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, বাংলাদেশের মতো একটি জনবসতিপূর্ণ দেশের পক্ষে বাঘ সংরক্ষণ করা খুবই চ্যালেঞ্জের বিষয়। কেননা এখানে বাঘের বসতবাড়ি খ্যাত সুন্দরবন ওই অঞ্চলের প্রায় এক কোটি মানুষের রুটি রুজির কেন্দ্রবিন্দু।
তিনি বলেন, সুন্দরবনের ওপর নির্ভর এই এক কোটি মানুষ সুন্দরবন থেকে মাছ, কাঁকড়া ও মধু আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে। বাঘের প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গ অত্যন্ত দামী হওয়ায় এক শ্রেণির অপরাধীরা বাঘ শিকার করে থাকে। আবার অনেক সময় বাঘও জনবসতিতে গিয়ে গৃহপালিত পশু শিকার করে বিপদের সম্মুখীন হয়।
মন্ত্রী বলেন, তারপরও বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড, বন বিভাগ বাঘ সংরক্ষণে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল মানুষকে সচেতন করে ও বিকল্প আয়ের ব্যবস্থার মাধ্যমে বাঘ সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বন ও পরিবেশ সচিব ড. কামাল উদ্দীন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) কবির বিন আনোয়ার, প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুছ আলী, ইউএস এইডের ডেপুটি অফিস ডিরেক্টর ও এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড গ্লোবাল ক্লাইমেট চেঞ্জ টিম লিডার নাথান সেইজ, বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্স স্টাডিস (বিসিএএস)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. এ আতিক রহমান, ওয়াইল্ডটিমের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম সংলাপে অংশ নেন।
পানি বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদ এবং ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাতের সঞ্চালনায় সংলাপের উল্লেখযোগ্য পর্ব ছিল টাইগার টক, মুক্ত আলোচনা, অঙ্গীকার পর্ব এবং প্রেরণা মূলক বক্তব্য।
এতে অংশ নেন স্মিথসোনিয়ান কনজারভেশন বায়োলজি ইন্সটিটউটের পরিচালক স্টিভেন এল মনপোর্ট, পরিবেশ বান্ধব অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি জগতের পথিকৃৎ মিরান আলী ও স্লোভাকিয়ার রাষ্ট্রদূত।
ইউএস এইডের অর্থায়নে চার বছর মেয়াদী (২০১৪-২০১৮) ‘বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প’র অধীনে সংলাপটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে চলমান বাঘ সংরক্ষণ কার্যক্রমকে দীর্ঘ মেয়াদী অংশীদারিত্বে রূপ দেওয়ার জন্য বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করা হয়। এজন্য একটি পরিবেশ সংরক্ষণধর্মী ব্যবসায়িক মডেল কিভাবে পরিবেশ, ভোক্তা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৬
আরএম/এমজেএফ/