কাছে গেলেই উড়ে যাওয়ার ভয়। তাই দূর থেকে যতখানি দেখা গেছে, তাতেই এক পাতি-শরালি যুগলের ভালোবাসার চিত্র বারবার ফুটে উঠেছে।
এ জলচর পাখিদের একসঙ্গে বসে থাকা কিংবা উড়ে যাওয়ার দৃশ্য প্রকৃতির এক অবিচ্ছেদ্য সৌন্দর্য। এ দৃশ্য স্বচোখে উপলব্ধি করা মাত্রই হৃদয় ভরে উঠতে বাধ্য।
কবি জীবনানন্দ দাশ সম্ভবত আগেই এ ব্যাপারটি উপলব্ধি করে লিখেছিলেন, ‘আমি যদি হতাম বনহংস / বনহংসী হতে যদি তুমি / কোনো এক দিগন্তের জলসিঁড়ি নদীর ধারে / ধানক্ষেতের কাছে। ’
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বলেন, আমাদের মতোই ওরাও যৌবনে জোড়াবাঁধে। একে অপরকে কাছে পেতে চায়। যেখানেই যায়, জোড়ায় জোড়ায়। প্রকৃতির ছোট ছোট এ দৃশ্যগুলো তখন তাদের প্রেনের বন্দনায় পূর্ণ হয়ে ওঠে।
তিনি আরও বলেন, এরা আমাদের দেশের আবাসিক এবং প্রাকৃতিক হাঁস। শীত মৌসুমে আমাদের হাওর-বিল ও জলাশয়গুলোতে তাদের বেশি দেখা যায়। এর কারণ হলো, ওরা তখন মিলিত হয়। বাকি সময়টুকু জোড়ায় জোড়ায় বা ছোট ছোট দলে বিছিন্ন হয়ে পড়ে। গ্রীষ্মকালে এরা ছোট জলাশয়ে বাস করে।
পাতি-শরালির শারীরিক আকৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ হাঁসগুলো দৈর্ঘ্য ৪২ সেন্টিমিটার এবং দেহের রং বাদামি। মাথার চাঁদি (মাথার উপরের আবরণ) কালচে।
এ হাঁসগুলো বিশেষ ব্যাপার হলো, ওড়ার সময় এদের পাখা থেকে ‘ঝন-ঝন’ শব্দ হয়। শুনতে দারুণ লাগে। বিলের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অবস্থা থেকে হঠাৎ যখন সম্মিলিতভাবে উড়াল দেয়, তখন ডানার অপূর্ব ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে চারপাশ, বলেব এই পাখি বিষয়ক লেখক ও গবেষক ইনাম আল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮
বিবিবি/ এনএইচটি